এপ্রিল ৯, ২০২২, ০৫:০৫ পিএম
অর্থনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার জন্য আগামী ৬ মাসের মধ্যে প্রায় ৩০০ কোটি ডলার বিদেশি সহায়তা প্রয়োজন হবে। জ্বালানি, ওষুধসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে এ সহায়তা লাগবে। আজ শনিবার দেশটির অর্থমন্ত্রী আল সাবরি রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাতকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুই কোটির বেশি জনসংখ্যার দেশ শ্রীলঙ্কা চরম অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। ঋণে জর্জরিত দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনক কমে গেছে। এ জন্য জ্বালানিসহ অন্য পণ্য আমদানির মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না দেশটি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকছে। মূল্যস্ফীতি মাত্রা ছাড়িয়েছে। বাজারে পণ্য নেই। খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য নিত্যপণ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পুরো মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করেছে। নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে আলি সাবরি যোগ দিলেও তিনিও এক দিন পরই পদত্যাগ করেন। তবে গতকাল শুক্রবার আবারও অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
আলি সাবরি বলেন, দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে ৬ মাসের মধ্যে প্রায় ৩০০ কোটি ডলার প্রয়োজন। তবে তা পাওয়া খুব কঠিন বলে মনে করেন তিনি। সাবরি বলেন, এটি কঠিন কাজ। নতুন করে আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ড গড়ে তুলতে চাইছে শ্রীলঙ্কা। ঋণ পরিশোধের ওপর স্থগিতাদেশও চাইবে তারা। সাবরি বলেন, ‘বড় ধরনের ঋণখেলাপ ঠেকাতে এ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ ধরনের ঋণখেলাপের পরিণতি কী তা আমরা বুঝি।’
জে পি মরগ্যানের বিশ্লেষকেরা চলতি সপ্তাহে আভাস দিয়েছেন, চলতি বছর শ্রীলঙ্কার মোট ঋণের পরিমাণ ৭০০ কোটি ডলারে পৌঁছাতে পারে। এতে চলতি হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ হবে ৩০০ কোটি ডলার। সাধারণভাবে চলতি হিসাবের মাধ্যমে দেশের নিয়মিত বৈদেশিক লেনদেনের পরিস্থিতি বোঝানো হয়। সাবরি বলেন, এ ছাড়া শ্রীলঙ্কা ভারতের কাছ থেকে জ্বালানির জন্য ঋণের আওতায় অতিরিক্ত ৫০ কোটি ডলার চাইবে। এর মাধ্যমে পাঁচ সপ্তাহের জ্বালানির চাহিদা মেটানো যাবে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), বিশ্বব্যাংক থেকেও সাহায্য চাইবে শ্রীলঙ্কা। চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোসহ দ্বিপক্ষীয় সহযোগীদের কাছ থেকে সহযোগিতা চাইবে দেশটি।
রয়টার্সকে সাবরি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান কোথায় আমরা তা জানি। এখন আগের অবস্থানে ফিরে যাওয়ার জন্য লড়াই করতে হবে। আমাদের আর উপায় নেই। মার্চের শেষের দিকে শ্রীলঙ্কার বিদেশি মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ ১৯৩ কোটিতে দাঁড়ায়।’ সাবরির মতে, আগামী ছয় মাসে সরকারকে কর হার ও জ্বালানির মূল্য আরও বাড়াতে হবে। তিনি মনে করেন, দেশকে সংকট থেকে বের করে আনতে এর বিকল্প নেই।