ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় বড় অগ্রগতিতে ইতিবাচক সাড়া শেয়ার বাজারে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ৩০, ২০২২, ০৮:০৭ এএম

ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় বড় অগ্রগতিতে ইতিবাচক সাড়া শেয়ার বাজারে

তুরস্কের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনার পর পরই ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাশিয়া। মস্কো বলছে, তারা রাজধানী কিয়েভের চারপাশে এবং উত্তরাঞ্চলীয় চেরনিহিভ শহরে তাদের সামরিক তৎপরতা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে দেবে। ইউক্রেনীয় পক্ষও বলেছে, তারা এরমধ্যেই রুশ সামরিক তৎপরতা কমিয়ে দেওয়ার নজির দেখতে পেয়েছেন। 

ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তকে সবচেয়ে ইতিবাচক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। শান্তি আলোচনায় এই অগ্রগতির খবরে ইতিবাচক সাড়া পড়েছে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারেও।

প্যারিস ও ফ্রাঙ্কফুর্টে শেয়ারের দাম তিন শতাংশেরও বেশি বেড়ে যায়। লন্ডনের ফুটসি শেয়ার ইনডেক্সও এক দশমিক তিন শতাংশ বেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রেও লেনদেনের শুরুতে শেয়ারের দাম বেড়েছে।

মিকোলাইভে রুশ হামলায় বিধ্বস্ত প্রশাসনিক ভবন।

মিকোলাইভে রুশ হামলায় বিধ্বস্ত প্রশাসনিক ভবন। ছবির উৎস: Reuters

রাশিয়ার ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্দার ফোমিন বলেছেন, তাদের এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হচ্ছে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি করা এবং আরো সমঝোতার পরিবেশ তৈরি করা। তুরস্কে তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠকের পর তুর্কী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভুলত কাভুসগলুও বলেছেন যে, আলোচনায় বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে।

ফোমিন বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়ার পর থেকে এবারই উল্লেখযোগ্য রকমের অগ্রগতি ঘটলো। রাশিয়ার কর্মকর্তারাও বলেছেন যে এই আলোচনা এখন এক বাস্তব পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। 

কিয়েভের ওপর রাশিয়ার সামরিক আক্রমণের পরিকল্পনা অনেকদিন ধরেই থমকে আছে। ইউক্রেনের সৈন্যদের প্রতিরোধের মুখে রাজধানীর আশেপাশের কিছু জায়গা থেকে রুশ বাহিনী ইতিমধ্যে পিছু হঠেছে। এ অবস্থায় ইউক্রেন ও রাশিয়া দুই পক্ষই আলোচনার ব্যাপারে উৎসাহ দেখায়।

রাশিয়ার ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্দার ফোমিন তুরস্কের শান্তি আলোচনায় অংশ নেন। রুশ টেলিভিশনকে ফোমিন বলেছেন, "ইউক্রেনের নিরপেক্ষতা এবং পরমাণু-মুক্ত মর্যাদা এবং নিরাপত্তার ব্যাপারে" অগ্রগতি হয়েছে। মূলত এ দুটি বিষয়ই বিবাদের মূল সূচনা। 

এর পরই রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সামরিক তৎপরতা নাটকীয়ভাবে কমিয়ে আনার কথা ঘোষণা করে। 

ইউক্রেন পক্ষের মধ্যস্থতাকারী ওলেকসান্দার চ্যালি রিপোর্টারদের বলেছেন, তাদের দেশের "ভৌগলিক অখণ্ডতা ও নিরাপত্তার জন্যেই ইউক্রেনের নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কূটনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে তা অর্জন করা হবে।"

ইউক্রেন বলছে, কিয়েভ ও চেরিনিহিভ এই দুটো জায়গা থেকে রুশ সেনা কমিয়ে আনার লক্ষণ তারা দেখতে পাচ্ছেন। বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে অবশ্য কোনো মীমাংসা হয়নি। তবে প্রেসিডেন্ট পুতিন ও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির মধ্যে সামনাসামনি একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

রুশ হামলায় মারিউপোল শহরে বিধ্বস্ত একটি গাড়ি।

রুশ হামলায় মারিউপোল শহরে বিধ্বস্ত একটি গাড়ি। ছবির উৎস: Getty Images

শান্তি আলোচনায় অগ্রগতির খবর সত্ত্বেও ইউক্রেনের বিভিন্ন জায়গায় মঙ্গলবারেও লড়াই অব্যাহত রয়েছে। চেরনিহিভ শহরের প্রশাসন জানিয়েছে, শহরে রুশ সৈন্যরা রকেট হামলা চালিয়েছে। শহরের মেয়র বলছেন, লড়াই শুরুর পর চারশ মানুষ সেখানে মারা গেছে।

দক্ষিণের মিকোলাইভ শহরের প্রশাসনিক ভবনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে। উত্তরের লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ক-এ লড়াই এখনও চলছে।

সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, এপি ও এএফপি

Link copied!