ইরানের রাজধানী তেহরানের এভিন কারাগারে আগুন লেগেছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ। এছাড়াও গুলির শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ইরানের রাজনৈতিক বন্দি, সাংবাদিক ও বিদেশি নাগরিকদের এভিন কারাগারে রাখা হয়ে থাকে। বিবিসির প্রতিবেদনে এই কারাগারকে ‘কুখ্যাত’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
আইআরএনএ জানিয়েছে, শনিবারের এ বিক্ষোভে আটজন আহত হয়েছেন। হিজাব পরার নিয়ম না মানার অভিযোগে আটকের পর পুলিশি হেফাজতে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনির মৃত্যুকে ঘিরে দেশটিতে মাসব্যাপী আন্দোলন চলছে। বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছেন। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এরই মধ্যে আটক হয়েছেন কয়েকশ।
১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে ইরান সরকারের কাছে এই বিক্ষোভ-সমাবেশ সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে যা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়াও আন্দোলনকারীরা দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বিরুদ্ধেও স্লোগান দিচ্ছেন।
এ দিকে, রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আইআরএনএ সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সঙ্গে কারাগারের ঘটনার যোগ নেই বলে জানিয়েছে।
ইরানের বিচার বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অপরাধ ও চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত বেশ কয়েকজন বন্দির মধ্যে লড়াইয়ের পর কারাগারের একটি কর্মশালায় আগুন লাগে। তেহরান ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, এভিন কারাগারের দিকে যাওয়ার রাস্তাগুলো যান চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, আমরা গুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছি।
অন্য একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কারাগারের প্রধান প্রবেশপথে বন্দিদের স্বজনরা জড়ো হয়েছিল। আগুন এবং ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল।
একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, কারাগারে শান্তি ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং পরিস্থিতি বর্তমানে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে বলেছেন যে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন শোনা যাচ্ছে এবং কারাগারের থেকে এখনও ধোঁয়া উঠছে।
উল্লেখ্য, এভিন কারাগারে বিভিন্ন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত বিদেশি নাগরিকসহ ইরানি নিরাপত্তার অভিযোগে বন্দিদের বেশির ভাগই রাখা হয়। কারাগারটি দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা অধিকার গোষ্ঠীগুলির দ্বারা সমালোচিত হয়েছে এবং ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ জন্য ২০১৮ সালে মার্কিন সরকারের কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।
সূত্র: আলজাজিরা