এইচএসবিসি ব্যাংকের বিভক্তি প্রস্তাব এজিএম-এ নাকচ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ৭, ২০২৩, ০৩:৪৫ এএম

এইচএসবিসি ব্যাংকের বিভক্তি প্রস্তাব এজিএম-এ নাকচ

এইচএসবিসি ব্যাংককে বিভক্ত করার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে পাঁচ ভাগের চার ভাগ শেয়ারহোল্ডার বা বিনিয়োগকারী। ফলে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বৃহৎ এ ব্যাংকটির এশিয়া ও পাশ্চাত্যের আর্থিক কার্যক্রম পৃথক হওয়ার বিষয়টি নাকচ হয়ে গিয়েছে।

লন্ডনের স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ মে) সন্ধ্যায় বার্মিংহামের উডকক স্ট্রিটে অবস্থিত ব্যাংকটির সদর দপ্তরে বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকটির ওয়েবসাইটে দেওয়া এজিএম মাইনোটস থেকে এসব তথ্য জানা গিয়েছে।

এইচএসবিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান মার্ক টাকার বলেন, “আমি আনন্দিত যে, শেয়ারহোল্ডারদের বৃহৎ অংশ ব্যাংকটির গঠন ও অপারেশন্স কৌশলের পক্ষে অপ্রতিরোধ্যভাবে তাদের ভোটিং ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন। এইচএসবিসি সহকর্মীবৃন্দ, পরিচালনা পর্ষদ ও বিনিয়োগকারীগণ এখন তাদের শক্তিশালী কর্মদক্ষতা বা 'স্ট্রং পারফরর্ম্যান্স' অর্জনের ‘শেয়ার্ড অবজেক্টিভ' বা যৌথ লক্ষ্য নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।’

এইচএসবিসি এশিয়া ও পাশ্চাত্য বিভাজনের প্রস্তাব উথাপনে বড় ভূমিকা ছিল চীনা কোম্পানি ‘পিং আন’ ইন্সুরেন্সের পক্ষ থেকে। ‘পিং আন’ এককভাবে এইচএসবিসির ৮ ভাগ শেয়ারের মালিক।

তারা তাদের দাবির পক্ষে বলেছিল, ব্যাংকটির বেশি মুনাফা আসে এশিয়া অঞ্চল থেকে। তাই ব্যাংকের আর্থিক অপারেশন্স পৃথক হলে তা এশিয়ার শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লাভজনক হবে। পিং আন-এর এ প্রস্তাবকে সমর্থন দেয় হংকংভিত্তিক বিনিয়োগকারীরা। এরই প্রেক্ষাপটে লুই ইউ কিন নামের এক স্বতন্ত্র বিনিয়োগকারী এ প্রস্তাব শুক্রবার এজিএম-এ দিলে ভোট অনুষ্ঠিত হয়।

এমন একটি প্রস্তাব এজিএম-এ আসছে তা আগে থেকেই জানতেন এইচএসবিসি চেয়ারম্যান মার্ক টাকার ও চিফ এক্সিকিউটিভ বা প্রধান নির্বাহী নোয়েল কুইন। এজন্যই তারা দুজনে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে শেয়ারহোল্ডারদের বৃহৎ স্বার্থে তাদের মতামত দেয়ার জন্য লবিং করে আসছিলেন।

উল্লেখ্য, ব্যাংকটি ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণের বছরে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। পরবর্তীতে দেওয়া লভ্যাংশ নিয়েও বিনিয়োগকারীদের অনেকের অসন্তোষ ছিল।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা 'দি ডিপ্লোম্যাট' তাদের রিপোর্টে বলেছে, এইচএসবিসি ব্যাংকের আর্থিক কার্যক্রম পৃথকীকরণ প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে এটা প্রকাশ পায় যে চীনা কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারকেরা একান্তে পরামর্শ দিয়েছে চীনের বাইরে থাকা সম্পদের উপর যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা থেকে সুরক্ষায় আগাম ব্যবস্থা নিতে।

"এইচএসবিসি ব্রেক-আপ প্রেসার মার্কস দি ইন্ড অব আ্যান ইরা"- শিরোনামের ঐ রিপোর্টে বলা হয়, পিং আন-এর এইচএসবিসি পৃথকীকরণের ডাক এ বার্তাও দেয় যে ভবিষ্যতে পশ্চিমা কোনো ব্যাংকের চীনে প্রবৃদ্ধি অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এইচএসবিসি ব্যাংকের বিরুদ্ধে গেল দুবছর ধরে হংকং-এ মানবাধিকারবিরোধী ধরপাকড় ও প্রকাশ্যে ন্যাশনাল সিকিউরিটি ল-কে সমর্থন এবং গণতন্ত্রপন্থীদের ব্যাংক এ্যাকাউন্ট ফ্রিজিং করে দেওয়ার মতো অভিযোগ পাওয়া গেছে।

দ্য ডিপ্লোম্যাট-এর প্রতিবেদনে এও বলা হয়, ব্যাংকটির তিনভাগের একভাগ সম্পদমূল্য শুধু হংকং-এর গ্রাহকদের অধীনে, একভাগ যুক্তরাজ্যের আর বাকি একভাগ চীনসহ সারাবিশ্বের গ্রাহকদের মধ্যে ছড়িয়ে আছে।

Link copied!