জনসংখ্যায় নাম্বার ওয়ান চীনকে ছাড়িয়ে প্রথমবার শীর্ষে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জানুয়ারি ২২, ২০২৩, ১১:৪১ পিএম

জনসংখ্যায় নাম্বার ওয়ান চীনকে ছাড়িয়ে প্রথমবার শীর্ষে ভারত

জনসংখ্যার নিরিখে চীনকে টপকিয়ে বিশ্বে এখন প্রথম দেশ ভারত। ২০২২ সালের শেষনাগাদ ভারতের জনসংখ্যা পৌঁছেছে ১৪১ কোটি ৭০ লাখে। একই সময়ে এশিয়ার আরেক দেশ চীনের জনসংখ্যা ১৪১ কোটি ২০ লাখ। অর্থাৎ চীনের চেয়ে ৫০ লাখ জনসখংখ্যা বেশি ভারতের। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউয়ের বরাত দিয়ে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের  প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠির বয়স ৩০ এর নিচে। বিরাট সংখ্যক এ জনসংখ্যার জন্য বেকারত্ব সংকটে পরতে পারে ভারত। দেশটির জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম হলেও ২০৫০ সাল পর্যন্ত জনসংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।

প্রতিবেদনে বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে বলা হয়, ভারতে জনসংখ্যা নিয়মিত বাড়ার কারণেই বেকারত্ব মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেকারত্ব দূর করতে ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সামাল দিতে নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রায় ২০ কোটি মানুষ ভারতের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাড়ি জমিয়েছেন। এই সংখ্যাটা দিন দিন বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ -গ্রামে কাজের সংকট ও নিম্ন মজুরি। ফলে মানুষ কাজের সন্ধানে গ্রাম থেকে শহরে চলে যাচ্ছেন।

কেরালাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের বিশেষজ্ঞ এস ইরুদায়া রাজনের ভাষ্যমতে, ভারতে জনসংখ্যার স্থানান্তরের ফলে শহরে মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এর ফলে শহরে এই মানুষগুলো মানসম্মত জীবনযাপন করতে পারবে কি না, তা বড় একটি প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। মানসম্মত জীবনযাপন করতে না পারলে শহরাঞ্চলে বস্তির সংখ্যা বাড়বে। আর দেখা দেবে নানান রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাব।

কেরালাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য মতে বর্তমানে দেশটিতে মানুষের গড় বয়স ২৮ বছরের বেশি। আর ৬০ বছরের বেশি মানুষের সংখ্যা ১০ শতাংশের বেশি। এখন বিশাল এক জনগোষ্ঠী তরুণ, তারা এক সময় ভারতের সবচেয়ে বড় বৃদ্ধ জনগোষ্ঠীতে পরিণত হবেন।

এদিকে,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ি, ভারতের জনসংখ্যা এখন ১৪১ কোটি ৭০ লাখ যা চীনের থেকে বেশি। ব্লুমবার্গ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী চীনের জনসংখ্যা এখন ১৪১ কোটি ২০ লক্ষ। অর্থাৎ ভারতের জন্যসংখ্যা চীনের থেকে ৫০ লক্ষ বেশি। তবে  ব্লুমবার্গ-এর প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থা ম্যাক্রোত্রান্ডস’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের জনসংখ্যা ১৪২ কোটি ৮০ লাখ। ওই প্রতিবেদনেও বলা হয় চীনের থেকে ভারত এগিয়ে গেছে জন্যসংখ্যার দিক দিয়ে।

ব্লুমবার্গ-এর রিপোর্ট বলছে, চীনের জনসংখ্যা রেকর্ডহারে কমছে।  দেশটির ন্যাশনাল ব্যুরো স্ট্যাটিস্টিকসের তথ্য জানায়, চীনে গত বছর ২০২১ সালের তুলনায় জনসংখ্যা কমেছে ৮ লাখ ৫০ হাজার।   চীনে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য যে এক সন্তান নীতি নেয়া হয়েছিল তার ফলেই উৎপাদন মুখিতা কম বলে জানানো হয়েছে। তবে সম্প্রতি চীন জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে নজর দিয়েছে এবং সন্তান উৎপাদনে বিভিন্ন প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের আটটি দেশের জনসংখ্যা বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যা হবে। এই আটটি দেশ হলো- কঙ্গো, মিশর, ভারত, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, ফিলিপাইন, পাকিস্তান ও তানজানিয়া। একই তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ বলছে, ২০২২ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধির অর্ধেকের কারণ হবে এশিয়া ও আফ্রিকার ওই ৮টি দেশ।

Link copied!