ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট

বাঁধ ভাঙায় ইউক্রেনের ৮০টি জনবসতি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা, অসংখ্য পশুর মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জুন ৭, ২০২৩, ০৫:৫০ পিএম

বাঁধ ভাঙায় ইউক্রেনের ৮০টি জনবসতি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা, অসংখ্য পশুর মৃত্যু

সংগৃহীত ছবি

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের কৌশলগত খেরসনের ‘নোভো কাখোভকা’ বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় অসংখ্য দ্বীপ প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে মস্কো ও কিয়েভ।

ইউক্রেনের রাষ্ট্রায়ত্ব পানিবিদ্যুৎ সংস্থার বরাত দিয়ে ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইঞ্জিন রুমে বিস্ফোরণের ফলে পুরো কেন্দ্রটি ধ্বংস হয়ে গেছে। বাঁধটি আংশিকভাবে ভেঙে গেছে। এর ফলে বহু এলাকা জলের তলায় চলে গেছে।

বাঁধ ভাঙার জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরকে দায়ী করেছে। জেলেনস্কি প্রশাসনের দাবি, তাদের সেনারা যাতে দক্ষিণ ইউক্রেন যেতে না পারে তার জন্যই রাশিয়ার সেনাবাহিনী এই বাঁধ উড়িয়ে দিয়েছে। তবে আর মস্কোর অভিযোগ, ইউক্রেনের বাহিনী গোলা মেরে এই কাজ করেছে।

রুশ নিয়ন্ত্রিত খেরসনের অংশে সোভিয়েত যুগে প্রায় ৯৮ ফুট প্রশস্ত এবং ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর বাঁধটি ১৯৫৬ সালে কাখোভকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অংশ হিসেবে দিনিপ্রো নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়। এখান থেকে ইউরোপের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র  ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি সরবরাহ করা হত। একইসঙ্গে রুশ নিয়ন্ত্রিত ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ অঞ্চলেও পানি সরবরাহ করা হতো।  বাঁধ ভাঙার ফলে প্রচুর দ্বীপ প্লাবিত হতে পারে। ইউক্রেন ও রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৮০টি জনবসতি এলাকা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

বাঁধ ভাঙার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনের বাঁধ ভাঙা নিয়ে রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি জানিয়েছেন, ‍‍`‍‍`এই হামলার পিছনে মস্কো আছে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে বাঁধ ভাঙার ফলে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।”

এবিষয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আরও  বলেন, “বাঁধে বিস্ফোরণের জন্য রাশিয়া কে দায়ী করছে ইউক্রেন।   আমরা সব রিপোর্ট খতিয়ে দেখছি। ইউক্রেন যাতে আরো তথ্য দেয়, তার জন্য তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। কী হয়েছিল, তা আমরা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।‍‍`‍‍`

বাঁধ ভাঙার ফলে পশুর মৃত্যু

বাঁধটি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং দ্রুতগতিতে প্লাবিত হওয়ায় অনেক গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। নোভা কাখোভকা এলাকার এক চিড়িয়াখানার মালিক জানিয়েছেন, তার আশঙ্কা, অন্ততপক্ষে তিনশ পশু মারা গেছে। এই এলাকাটি রাশিয়ার সেনার অধিকারে আছে।

এফ১৬ যুদ্ধবিমান নিয়ে হুঁশিয়ারি মস্কোর

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির অনুরোধ মেনে অ্যামেরিকা যদি ইউক্রেনকে এফ১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করে তাহলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এফ১৬-র কিছু বিমান পরমাণু অস্ত্র বহন করতে পারে। যদি তারা এটা বুঝতে না পারে, তাহলে তাদের সামরিক কৌশল খুবই খারাপ।”

তবে ইউক্রেনকে এফ১৬ বিমান দেওয়ার বিষয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি জানিয়েজেন ‍‍`‍‍`কিয়েভের আত্মরক্ষার জন্যই অত্যাধুনিক এই যুদ্ধবিমান দেয়ার উদ্দেশ্য ওয়াশিংটনের। এতে তারা তাদের আকাশসীমা রক্ষার পাশাপাশি  আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করতে পারবে।‍‍` ইউক্রেনের সামরিক শক্তি নিয়ে রাশিয়া চিন্তিত হলে দেশটি থেকে তাদের সৈন্য সরানো উচিত বলেও মন্তব্য করেন জন কিরবি।

Link copied!