যৌনপেশা আইনসম্মত, যৌনকর্মীদের গ্রেপ্তার-হেনস্থা নয়

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ২৬, ২০২২, ০৪:৪৮ পিএম

যৌনপেশা আইনসম্মত, যৌনকর্মীদের গ্রেপ্তার-হেনস্থা নয়

ভারতে যৌনপেশা আইনসম্মত এবং এই পেশায় নিয়োজিত যৌনকর্মীদের পুলিশ কোনো ধরণের হস্তক্ষেপ বা মামলা করতে পারবে না বলে নির্দেশনা জারি করেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। 

ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই সংক্রান্ত ছয়টি নির্দেশনা জারি করেছেন।

ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের ওই বেঞ্চের নির্দেশনায় বলা হয়েছে,  আর পাঁচটা পেশার মানুষের মতো যৌনকর্মীদেরও সমমর্যাদা ও সমান অধিকার রয়েছে। এই বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি স্বেচ্ছায় এই পেশায় আসা কর্মীদের কাজে অহরহ পুলিশি হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। এছাড়া, যৌনপেশায় নিয়াজিতদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে পারবে না।

বেঞ্চের জারি করা ৬ নির্দেশনার মধ্য দিয়ে মধ্য দিয়ে যৌনকর্মীদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলে মনে করছে সুপ্রিম কোর্ট। বেঞ্চ বলেছে, ‘‘যৌনকর্মীরাও আইনের চোখে সমান সুরক্ষার অধিকারী। যখন এটা স্পষ্ট যে, যৌনকর্মী এক জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং সম্মতি সাপেক্ষেই যৌনতা বিক্রি করছেন, তখন পুলিশকে অকারণ হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনও ফৌজদারি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যাবে না। সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ এই দেশের প্রত্যেক নাগরিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের অধিকার সুনিশ্চিত করেছে।’’

আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যৌনপল্লিতে পুলিশি অভিযানের সময় যৌনকর্মীদের গ্রেফতার, দণ্ডিত করা, হেনস্থা করা উচিত নয়। কারণ যৌনকর্ম বেআইনি নয়, শুধুমাত্র যৌনপল্লি চালানো বেআইনি।

মা যৌনপেশায় আছেন, শুধু সেই যুক্তিতে সন্তানকে তাঁর মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি কোনও যৌনকর্মী যদি তাঁর বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে যান, তা হলে সেটিও সমান মনোযোগের সঙ্গে দেখবেন পুলিশকর্মী। বিশেষত, যদি যৌনকর্মী তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা বা অপরাধের অভিযোগ নিয়ে আসেন, তা হলে দ্রুততার সঙ্গে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে তদন্ত শুরু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে, এক জন সাধারণ মানুষ যেমন সুবিধার অধিকারী, এক জন যৌনকর্মীর ক্ষেত্রেও তার অন্যথা করা যাবে না। কোনও ঘটনা ঘটলে যৌনকর্মীদের পরিচয় যেন প্রকাশ্যে না আসে, সে ব্যাপারেও স্পষ্ট নির্দেশিকা দিয়েছে আদালত।

সুপ্রিম কোর্ট এই সুপারিশগুলোর ব্যাপারে কেন্দ্রের মতামতও জানতে চেয়েছে। ২৭ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি। সে দিনই এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের জবাব শুনবে শীর্ষ আদালত।

Link copied!