গরমে অতিষ্ট হয়ে আপনার শিশু বার বার কান্না করছে?
ঘাম থেকে গায়ে চুলকানি উঠছে?
ঘরের খাবার খেতে চাচ্ছে না?
ঘন ঘন পায়খানা করছে?
চলমান প্রচণ্ড গরমে ডিহাইড্রেশন থেকে আপনার সন্তানকে দূরে রাখতে পানির কোনো বিকল্প নেই। শিশু শুধুই পানি পান করতে না চাইলে ঘরে তৈরি শরবত যেমন- তরমুজ, আনারস, পেঁপের জুস ও কয়েকবার লেবু শরবতও দিতে পারেন। এই গরমে ফ্রিজে এমন ভিন্ন রকম পানীয় বানিয়ে রাখতে পারেন।
অনেকেই শিশুদের গরমে স্যালাইন খাওয়ান। কিন্তু ডায়রিয়া ছাড়া শিশুদের স্যালাইন খাওয়ানো ঠিক নয়। এ সময় শিশুদের পানিবাহিত রোগ যেমন- টাইফয়েড, জন্ডিস, জলবসন্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই বাইরের খাবার একেবারেই খাওয়ানো যাবে না।
অনেকেই অল্প পানিতে অল্প স্যালাইন গুলে শিশুদের খাওয়ান। কিন্তু এতে সোডিয়াম-পটাশিয়াম ইমব্যালেন্স হয়। এতে অনেক সময়ই কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাজেই এই ভুল করা যাবে না।
ছয় মাসের কম বয়সীদেরও ডায়রিয়া হলে স্যালাইন দেওয়া যাবে।
সবার ক্ষেত্রেই স্যালাইন বানানোর নিয়ম একই হলেও দুই বছর পর্যন্ত বয়সীদের ১০ থেকে ২০ চামচ, আর এর বেশি হলে ২০ থেকে ৪০ চামচ দিতে হবে।
গরম সহ্য করতে না পেরে শিশুরা ঘামতে থাকে। ঘাম থেকে চুলকানির সমস্যা হয়। তাই শিশুদের শরীরে এ সময় তেল দেওয়া যাবে না। তবে লোশন দেওয়া যেতে পারে। যেসব শিশুর ঘামাচির সমস্যা রয়েছে, তাদের পাউডার দিতে হবে। তবে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, সেসব শিশুর ঠোঁটের চারপাশে পাউডার না ব্যবহার করাই ভালো।
মশা তাড়াতে কয়েল এড়িয়ে চলাই ভালো। তবে যদি কয়েল বা এরোসল স্প্রে ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে যে কক্ষে ব্যবহার করা হবে, সেখানে অন্তত আধা ঘণ্টা পর্যন্ত শিশুদের যাওয়া নিষেধ।
হিট স্ট্রোক এড়াতে শিশুরা যেন রোদে দৌড়াদৌড়ি না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কোনোভাবেই যেন শিশু ঘেমে না যায়। ঘেমে গেলে মাথা খুব ভালোভাবে মুছে নিতে হবে, যেন চুলের ভেতরে ভেজা না থাকে। বাড়ির ভেতরেই তাদের রাখতে হবে। শিশু যদি রোদ থেকে ফেরে সাথে সাথে তাকে গোসলে পাঠাবেন না কিংবা ঠান্ডা পানি দেবেন না। একটু স্থির হওয়ার পর তাকে পানি দিন, গোসল করতে বলুন।
যে সব শিশুরা খাবার গ্রহণ করতে পারে, তারা বাড়িতে থাকলেই নানা ধরনের বাইরের খাবারের বায়না ধরে যেমন-পিৎজা, বার্গার। এগুলো এড়িয়ে বাড়িতেই রান্না করে দিন। তবে খুব বেশি তেলমসলা দেবেন না। ভাজাভুজি নয়, বরং কাবাব বা সিদ্ধ ধরনের খাবার বানিয়ে খাওয়াতে পারেন শিশুদের।
এই সময়ে শিশুরা যেন সুতির পোশাক পরে, তা নিশ্চিত করতে হবে। বাড়িতেও শিশুদের হালকা রঙের পোশাক পরান। এই গরমে শিশু দিনে এক বার ভালো করে গোসল করলেও দুপুর আর বিকেলের দিকে গা স্পঞ্জ করিয়ে দিতে পারেন।