চট্টগ্রামে কোটা সংস্কারের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় একটি ভবন থেকে নিচে পড়ে চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। সংস্কার আন্দোলনের কর্মীদের হামলার হাত থেকে রক্ষা পেতে ভবনের পাইপ পেয়ে নিচে নামার সময় তারা পড়ে যান। এর আগে তাদের পাথর ছুড়ে গুরুতর আহত করা হয়।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মুরাদপুর এলাকার বেলাল মসজিদ গলির মিরদাদ ম্যানসনের ছাদে এই ঘটনা ঘটে।
ওই চারজনই ছাত্রলীগ যুবলীগের কর্মী। তাদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা জালাল উদ্দীন জুবায়ের ও ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা ধীমান সেন গুপ্ত। তারা দুইজনই মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও যুবলীগ নেতা নুরুল আজম রনির অনুসারী।
চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশিক বলেন, ‘জালালের চোখে কোপ দেওয়া হয়েছে, ধীমানও গুরুতর আহত। এমন আরও দুইজন আছে।’
এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ভবনের ছাদে বেশ কিছু মানুষের ভিড়। ভবনটির নিচে মৃতপ্রায় অবস্থায় পড়ে আছে চারজন। তাদের ঘিরে আরও ৮-১০ জন। ঘিরে রাখাদের কয়েকজন আহত ওই তিনজনকে মারতে চাইলেও পাশ থেকে বাকিরা আর মারতে নিষেধ করছিল। ওই সময় আরও কয়েকজন ভবনের পাইপ বেয়ে নিচে নামছিল।
আহত হয়ে নিচে পরে থাকা চারজনই ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মী ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন পাঁচলাইশ থানা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি শাহজাদা চৌধুরী। তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘কোটা সংস্কারের কর্মীদের সঙ্গে আমাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর আমাদের ২৫-৩০ জনের একটি দল মুরাদপুরের দিকে যায়। হঠাৎ তাদের চারদিক থেকে আক্রমন শুরু হলে আত্মরক্ষার্থে তারা বেলাল মসজিদের মিরদাদ ম্যানশনের ছাদে অবস্থান নেয়। আন্দোলনকারীরা তখন পাশের ওয়েল ফুডের ভবনে উঠে। ওই ভবনের ছাদ মিরদাদের ছাদের চেয়ে উঁচু। সেখান থেকে তারা বড় বড় পাথর ছুঁড়তে শুরু করে ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে। একপর্যায়ে কয়েকজন ওয়েল ফুড়ের ভবন থেকে মিরদাদের ছাদেও চলে আসে। তাদের হাতে ছুরি চাইনিক কুড়ালও ছিল। তখন জালাল, ধীমানসহ কয়েকজন পাইপ বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করে নিচে পরে যায়।’
ওই ভবনে আটকা পড়ে আহত হওয়াদের মধ্যে ওই দুইজন ছাড়াও মহানগর যুবলীগ নেতা জয় শংকর দাশ, মেহেদী হাসান, পাঁচলাইশ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তানভীর হোসেনসহ ৩০ জনের মত ছিলেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত ১২ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল ও বাকিদের পার্কভিউসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান ছাত্রলীগের এই নেতা।