ডিসেম্বর ৬, ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ ২৮টি ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা সভা করেছে। এতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর কাঁটাবনের গ্লোরিয়াস সেন্টারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ না নেয়া, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতিসহ নানা ইস্যুতে বৈঠক করেছে ছাত্রদল, ছাত্র ফেডারেশন, আট বামসংগঠনের মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটসহ ২৮টি ছাত্র সংগঠন।
যদিও এটিকে ছাত্রনেতারা রুটিন বৈঠক বলছেন। তবে জানা গেছে, মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়। ওই বৈঠকে সব ছাত্র সংগঠনকে না ডাকায় আলাদা একত্রিত হওয়ার পথ উন্মুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা মিটিং কেন বয়কট করল ছাত্রদল, ছাত্রফেডারেশন ও ছাত্রফ্রন্ট?
তবে বৈঠকে গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যার বিচার এবং আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকা, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে থাকার বিষয়ে সংগঠনগুলো ঐক্যমতে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি চালু রাখা, ছাত্রসংসদ নির্বাচন, ৫ আগস্টের পর জাতীয় রাজনীতির হালচাল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্লাটফর্ম রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
জানতে চাইলে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের সমন্বয়ক সালমান সিদ্দিকী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্লাটফর্মে আমরা সবগুলো ছাত্রসংগঠন ছিলাম। ৫ আগস্টের পর তারা অঙ্গীকার করেছিল, সব ছাত্র সংগঠনগুলোর পরামর্শ নিয়ে গণতান্ত্রিক উপায়ে সিদ্ধান্ত নেব। অথচ, আমরা দেখতে পাচ্ছি, বৈষম্যবিরোধীরা ধারাবাহিকভাবে গণতান্ত্রিক চর্চা থেকে সরে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে যে ঐক্য হয়েছিল, সেখানে এক ধরনের ফাটল ধরেছে। তার দায় কোনোভাবেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এড়াতে পারে না।
সালমান আরও বলেন, আমরা দ্রুত ডাকসু নির্বাচনের কথা বলেছি। আমরা মনে করছি, ছাত্রসংসদ না থাকার কারণে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরছে না।
একই কথা বলেছেন ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ। তিনি সমকালকে বলেন, আমরা চাই, অতি দ্রুত ডাকসু নির্বাচন হয়ে যাক।
তবে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, আমরাও একটা মত দিয়েছি যে, তাড়াহুড়ো করে ছাত্রসংসদ নির্বাচন দিলে তা কার্যকর হবে না।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এখন যেহেতু ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক সময়। ছাত্র সংগঠনগুলো শিক্ষার্থীদের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। সুতরাং শিক্ষার্থীদের বোঝার সময় দিতে হবে। কোন ছাত্রসংগঠন ভালো কোনটা মন্দ। সে সময়টুকু নিশ্চিত করে ছাত্রসংসদ নির্বাচন দেওয়ার কথা আমরা বলেছি।
নাসির বলেন, গত ১৫ বছর ধরে শিক্ষার্থীরা প্রত্যেক ছাত্র সংগঠনের মধ্যে তূলনামূলক বিচার করার সুযোগ পায়নি। কারা শিক্ষার্থীদের জন্য কতটুকু কাজ করতে পারবে, কতটুকু সক্ষমতা রয়েছে, এ পরিস্থিতিটি বোঝার জন্য যে পরিবেশ, তা তারা পায়নি।
ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে আহ্বান না করার বিষয়ে নাছির উদ্দিন বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে বসব। এখন যেহেতু তারা রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন না। তাদেরকে বলা হয়নি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেও সামনে আহ্বান করা হবে। ছাত্রশিবিরের বিষয়ে অনেকের আপত্তি ছিল। সেকারণে তাদেরকে আমরা এ পর্বে আমন্ত্রণ জানাইনি।
মতবিনিময় সভায় অংশ নেয়া ছাত্রসংগঠনগুলো হল- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন (গণসংহতি), ছাত্র আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জেএসডি), জাতীয় ছাত্র সমাজ (জাফর), জাগপা ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্র মিশন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ভাষানী ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজ (পার্থ), ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র মজলিস, বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম ছাত্রলীগ (নুর আলম), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র সমাজ এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন (মুক্তি কাউন্সিল)।