জানুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৯:০৬ পিএম
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ৭০ নম্বর পেয়েও সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ মেলেনি অনেকের। কিন্তু কোটার মারপ্যাঁচে এবার প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। যাদের মধ্যে ১৯৩ জন মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারী।
দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবার ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭০ নম্বর পেয়েও সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাজারও শিক্ষার্থী। অন্যদিকে ভর্তি পরীক্ষায় ৪১ নম্বর থেকে ৪৬ নম্বর পেয়েও প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
দেশের ৫৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে মোট ৫ হাজার ৩৮০টি আসনের মধ্যে ৪ হাজার ৭২টি সাধারণ আসন, মুক্তিযোদ্ধার পুত্র-কন্যা ও নাতি-নাতনিদের জন্য ২৬৯টি এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জন্য ৩৯টি আসন সংরক্ষিত। সাধারণ আসনের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগের জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক কোটা সংরক্ষিত রয়েছে।
সাধারণ আসনের মধ্যে জেলা কোটা থাকলেও ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে জেলা কোটা বাদ দেওয়া হয়েছে। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪০। পাস নম্বর পেয়েই মুক্তিযোদ্ধা এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর উপজাতি শিক্ষার্থীরা সরকারি মেডিকেলে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সব মিলিয়ে আসন রয়েছে ২৬৯টি। তবে এর মধ্যে পাস করেছেন ১৯৩ জন। পাসকৃতদের তথ্য যাচাই করা হবে। এরপর ভর্তির জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা: মো: সারোয়ার বারী বলেন, এমন হওয়ার কথা ছিল না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানাতে হবে।
এদিকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৪১ নম্বর পেয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তারা বলছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরও কোটা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত ভালো হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। তিনি বলেছেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় এখনো কীসের কোটা? আজ থেকেই এই শোষণের শেষ হতে হবে। ফুলস্টপ।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার লিখেছেন, ‘৪১ পেয়ে না-কি মেডিকেলে চান্স পেয়েছে কোটার জোরে, অথচ ৭৩ পেয়েও চান্স পায়নি! ছোটরা দাঁড়িয়ে যাও, পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ। গণঅভ্যুত্থানের সূচনা তো কোটা থেকেই।’
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সারাদেশে একযোগে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করেছিলেন ১ লাখ ২৫ হাজার ২৬১ জন। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬০ হাজার ৯৫ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরীক্ষায় পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। এর মধ্যে ছেলে পরীক্ষার্থী ছিল ২২ হাজার ১৫৯ জন যা উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর ৩৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। উত্তীর্ণ মেয়ে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৩৭ হাজার ৯৩৬ জন যা উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর ৬৩ দশমিক ১৩ শতাংশ।