রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা পেলে জুলাই মাসেই জাতীয় সনদ: আলী রীয়াজ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ১৭, ২০২৫, ০১:৩৪ পিএম

রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা পেলে জুলাই মাসেই জাতীয় সনদ: আলী রীয়াজ

ছবি: সংগৃহীত

আগামী মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ প্রণয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা চেয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

তিনি বলেছেন, “আমাদের লক্ষ্য যেটা আমরা বারবার বলে এসেছি, জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে- আমরা জুলাই মাসের মধ্যেই জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব।

“সেই ক্ষেত্রে আপনারা (রাজনৈতিক দলগুলো) সহযোগিতা দেখাচ্ছেন এবং এই সময়ে সহযোগিতা করছেন, সেজন্য নেতৃবৃন্দের প্রতি আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। আমি আশা করছি যে, এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে আমাদের পক্ষে অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে।”  

মঙ্গলবার, ১৭ জুন সকালে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার সংলাপের সূচনা তিনি এ মন্তব্য করেন।

আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি যে, সমস্ত বিষয়গুলোতে সকলে না মানলে সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন বিষয়ে একমতে আসতে পারি। আমি আবারো বলি যে, সব বিষয়ে হয়তো একমত হব না; কিন্তু তার পরও জাতি এবং রাষ্ট্রের স্বার্থে যেমন খানিকটা হলেও ছাড় দিয়ে এক জায়গায় আসতে পারি, সেই চেষ্টাটা আপনাদের করেছি। আমরা চাই, আলোচনা করে একটা জায়গায় আসা।”

বেলা সাড়ে ১১টা য় বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ সংলাপ চলছে।

অনুষ্ঠানে রয়েছেন বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদ ও ইসমাইল জবিহউল্লাহ, জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, এবি পার্টির আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, এনসিপির তাসনিম জারা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, বিএলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশ জাসদের মোস্তাক হোসেনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের নেতারা। বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি।

জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন। বৈঠক রয়েছেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।

ঐকমত্য কমিশন বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ধাপে ধাপে আলোচনা হবে।

“এতে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, নারী প্রতিনিধিত্বসহ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এবং প্রধান বিচারপতির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে দ্বিমত রয়েছে সেসব বিষয়ে ঐক্যমত্যের ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে।”

কোরবানির ঈদের আগে প্রথম ধাপের আলোচনা শেষে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার জন্য ২ জুন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসেছিল ঐকমত্য কমিশন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত অক্টোবরে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিনের প্রতিবেদন জমা পড়ে ফেব্রুয়ারি মাসে। এসব প্রতিবেদনের সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

তারা সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত জানতে চায়- যাদের মধ্যে ৩৩টি মতামত জানায়। এরপর ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত তাদের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনের মাধ্যমে প্রথম পর্বের সংলাপ সম্পন্ন করে ঐকমত্য কমিশন।

আলোচনার সুবিধার্থে কয়েকটি দলের সঙ্গে একাধিক দিনও বৈঠক চলে। আলোচনার মধ্য দিয়ে বেশ কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য ও আংশিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে।

Link copied!