রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া বিতর্কিত - টিআইবি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ১৮, ২০২৪, ০৬:১৩ এএম

রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া বিতর্কিত - টিআইবি

বিএনপি চাঁদাবাজি, সহিসংসতা, আধিপত্য বিস্তারের সংস্কৃতি বজায় রেখেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা ও প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়া বিতর্কিত বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
‍‍`নতুন বাংলাদেশ‍‍` কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন- পরবর্তী ১০০ দিনের ওপর পর্যবেক্ষণ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে  এই তথ্য উঠে আসে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রশাসনে কোথাও কোথাও পদত্যাগের জন্য বাধ্য করা হয়েছে। কিসের ভিত্তিতে চুক্তিতে নিয়োগ তা পরিষ্কার নয় - নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ক্ষেত্রবিশেষে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড ও স্বচ্ছতার অনুপস্থিতি
কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর চাপে গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা পরিবর্তন করা হয়েছে। জনপ্রশাসনে পেশাদারিত্বের অভাব রয়েছে। 

এদিকে বিএনপির মধ্যে দখলবাজি, চাদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের সংস্কৃতি বিদ্যমান। তবে জামায়েত ইসলামী ও অন্যান্য ইসলামী দলের ধর্মভিত্তিক রাজনীতির প্রভাব বেড়েছে।

পর্যবেক্ষণে আরও দেখা যায়, আন্দোলনে সংঘটিত সহিংসতার বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এই প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলছে। সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অ্যাডহক প্রবণতা, উপদেষ্টা পরিষদ গঠন ও দায়িত্ব বণ্টনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বিতর্কিত হয়েছে। প্রশাসন পরিচালনায় সরকারের দক্ষতা ও কর্মপরিকল্পনার ঘাটতি লক্ষ করা যায়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারে দায়িত্বশীলদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা প্রকাশ পেয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর পরিবর্তন করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে দখল ও আধিপত্য বিস্তারের সংস্কৃতি এখনো চলমান। একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ও দলীয়করণের পরিবর্তে আরেকটি গোষ্ঠীর প্রতিস্থাপন/হাতবদল হয়েছে বলে লক্ষ করা যায়।

টিআইবির তথ্য বলছে, রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন অংশীজনের পক্ষ থেকে সংস্কারের ক্ষেত্রে সরকারকে প্রয়োজনীয় সময় দেওয়ার প্রশ্নে ধৈর্যের ঘাটতি লক্ষণীয়। গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ ও হুমকি-হামলাসহ কোনো কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করার তৎপরতা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। সহিংসতা ও বলপ্রয়োগের কারণে জেন্ডার, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও নৃতাত্ত্বিক বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। ভারত কর্তৃক কর্তৃত্ববাদ পতনের বাস্তবতা মেনে নিয়ে নিজেদের ভুল স্বীকারে ব্যর্থতা ও তার কারণে অপতৎপরতার ফলে ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েনে সরকার ও দেশের জন্য ঝুঁকি বেড়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকি। ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা পালন করি।’

তিনি আরও বলেন, ব্যক্তির পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু কাঠামো এখনো পরিবর্তন হয়নি। 

এছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন খাতে সংস্কারের  প্রয়োজন। রাজনীতি সাথে আমলাতন্ত্রের সাথে ব্যক্তিমালিকানাধীন খাত যেন একসাথে দেখা না হয় সেটার দিকে নজর দিতে হবে।

Link copied!