বান্দরবানের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) প্রধান নাথান বমের স্ত্রী ও রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স লাল সমকিম বমকে তাৎক্ষণিক বদলি (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়েছে। তাকে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যার হাসপাতালে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) বান্দরবানের সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘একই হাসপাতালের নার্স দীপালি বাড়ৈকেও পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজিএনএম) দপ্তর থেকে জনস্বার্থে গত সোমবার তাদের তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ দেওয়া হয়।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লাল সমকিম বমকে এর আগে একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তিনি তখন দাবি করেছিলেন, তার স্বামীর সঙ্গে কয়েক বছর ধরে তার যোগাযোগ নেই।
বদলির কারণ জানতে চাইলে দায়িত্বরত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, সেটা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলতে পারবেন। বদলির আদেশ এসেছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কেএনএফ প্রধান নাথান বমের বাড়ি রুমা বাজারসংলগ্ন ইডেনপাড়া। যেখানে নাথান বমের কৈশোর কেটেছে। সেখানে কাঁচা-পাকা একটি টিনশেড ঘরে থাকতেন নাথান বম। নাথানের মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই। নাথানের স্ত্রী লাল সমকিম বম, তাদের দুই সন্তান স্কেন্ডি বম (৫) ও স্কলার বম (১৫)। স্কলার বর্তমানে ভারতের মিজোরামে মামার বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করছে। স্কেন্ডি স্থানীয় একটি স্কুলে প্রাক-প্রাথমিকে পড়ছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) আব্দুলাহ আল হাসান বলেন, ‘৮ এপ্রিল ঢাকার নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর থেকে নাথান বমের স্ত্রী ও আরেকজন নার্সের নামে একটা বদলির আদেশ এসেছে। ওই আদেশ অনুযায়ী এই দুজনকে ৯ এপ্রিল থেকে লালমনিরহাট জেলায় জেনারেল হাসপাতালে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়।’
২০২২ সালের শুরু থেকেই কেএনএফের নানান সশস্ত্র তৎপরতা চলে আসছে পাহাড়ের বেশ কিছু এলাকায়।
উল্লেখ্য, ২ এপ্রিল রাতে এবং ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের রুমা এবং থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র লোকজন। তারা টাকা লুট করে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে, একজন ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি লুট করে। গত ৪ এপ্রিল রাতে ব্যাপস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করে র্যাব।