আগস্ট ১৭, ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম
বরিশালের গৌরনদীতে পূর্বে দাবি করা চাঁদা না পেয়ে ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে রাশেদ সিকদার (২৪) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত যুবক রাশেদ সিকদারের বাবা কামাল সিকদার উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বড় দুলালি গ্রামের বাসিন্দা।
গতকাল শুক্রবার (১৬ আগস্ট) মারধরে আহত ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন। এ ঘটনায় বাদী হয়ে বার্থী ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি আল আমিনসহ পাঁচজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন নিহত রাশেদের বড় ভাই রাসেল সিকদার।
রাশেদের বাবা কালাম সিকদার গণমাধ্যমকে বলেন, “আমার বড় ছেলে রাসেল সিকদারের ঢাকার ইসলামপুরে একটি প্লাস্টিকের কারখানা রয়েছে। ছোট ছেলে রাশেদ সেই কারখানায় কাজ করে। শুক্রবার সকালে রাশেদ বাড়িতে আসে। সন্ধ্যায় তার আড়াই বছরের ছেলের জন্য মিষ্টি কিনতে বার্থী বাজারে যায়। সেখানে ছাত্রদল নেতা আল আমিনসহ কয়েকজন রাশেদের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা এনেছে কি না জানতে চায়। একপর্যায়ে তারা রাশেদের ওপর চড়াও হয়। আত্মরক্ষার্থে পাশের ঘরে আশ্রয় নেয় রাশেদ। সেখানে তাকে কাঠ দিয়ে মাথায় আঘাত করে তারা।”
গণমাধ্যমকে রাশেদের বাবা আরও বলেন, “স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরে সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাশেদকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার ছোট ছেলের মৃত্যু হয়।” তার দাবি, তার ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন। পড়াশুনা করানোর সার্মথ্য না থাকায় তাকে ঢাকায় কাজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্লাস্টিক কারখানা দিয়ে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হওয়ায় তার ছেলের কাছে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করত ওই ছাত্রদল নেতা। টাকা না দেওয়ায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার পরিবারের কেউ কোনও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়।
একই কথা বলেছেন রাশেদের ভাই ও মামলার বাদী ঢাকার ইসলামপুরের সিকদার প্লাস্টিক সেন্টারের মালিক রাসেল সিকদার। তিনি বলেন, “আমার ভাই রাশেদ আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করত। মাসে দুই-একবার বাড়িতে আসত। আমি কিংবা আমার ভাই কোনও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই।”
গৌরনদী উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি মো. রুবেল গোমস্তা বলেন, “ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলে আল আমিনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় রাশেদের ভাই পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। রাশেদের কোনও রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। চাঁদা না দেওয়ায় এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে।