বেটা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেজ ছেলে, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের ৭০তম জন্মদিন আজ (শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল)। ১৯৫৪ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
সংস্কৃতিপ্রেমী ও ক্রীড়াবিদ হিসেবেও পরিচিত শেখ জামাল ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে শেখ জামালও গৃহবন্দি ছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসমরে নেতৃত্ব দেন তিনি।
শেখ জামাল ধানমন্ডি থেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পথচলা শেষে ভারতের আগরতলা পৌঁছান এবং সেখানে মুজিব বাহিনীতে (বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সেস, বিএলএফ) যোগদান করে প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টরে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেন।
শেখ জামাল ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক চৌকস মেধাবী সেনা অফিসার। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের প্রথম ব্যাচের কমিশন্ড অফিসার। ১৯৭৪ সালের ২৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় সফরে যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো বাংলাদেশে আসেন। শেখ জামালের মধ্যে সেনাবাহিনীতে যোগদানের প্রবল আগ্রহ দেখে টিটো তাঁকে যুগোস্লাভ মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দেন। ১৯৭৪ সালের বসন্তে ঢাকা কলেজের ছাত্র ও একাত্তরের কিশোর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল যুগোস্লাভিয়ার মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন।
১৯৭৫ সালের ২৭ জুন অনুষ্ঠিত হয় স্ট্যান্ডার্ড মিলিটারি কোর্স-৮-এর প্রার্থিত সভরিন (পার্সিং আউট) প্যারেড। বিদেশি ক্যাডেটদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কমিশন লাভ করেন তিনজন গর্বিত তরুণ। তাঁদের দুজন হলেন, অফিসার ক্যাডেট আলাউদ্দিন মো. আবদুল ওয়াদুদ (পরবর্তী সময়ে মেজর জেনারেল) ও মাসুদুল হাসান (পরবর্তী সময়ে ক্যাপ্টেন)। তৃতীয় তরুণের নাম শেখ জামাল। তিনি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় পুত্র।
স্যান্ডহার্স্ট একাডেমি থেকে ফিরে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের পোস্টিং হয় ঢাকা সেনানিবাসের দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গলে। এখানে তাঁর চাকরিকাল ছিল প্রায় দেড় মাস। কিন্তু এই স্বল্প সময়ে অফিসার ও সৈনিকদের মধ্যে তিনি চমৎকার পেশাগত দক্ষতা ও আন্তরিকতার ছাপ রেখেছিলেন। কয়েক সপ্তাহেই তিনি অফিসার ও সৈনিকদের মধ্যে তাঁদেরই একজন হয়ে ওঠেন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লং কোর্স এর প্রথম ব্যাচের কমিশন্ড অফিসার।
১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট ব্যাটালিয়ন ডিউটি অফিসার হিসেবে ক্যান্টনমেন্টে নিজ দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ওই দিন রাতে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফিরে আসেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালোরাত্রিতে ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে নিহত হন শেখ জামাল।
শেখ জামালের জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শুক্রবার সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
-20241027115010.png)
-20241102183141.jpg)
