খ্যাতিমান সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ ও ’মধ্যরাতের অশ্বারোহী’ নামে জনপ্রিয় কলামের লেখক ফয়েজ আহমদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
ফয়েজ আহমদ ১৯২৮ সালের ২ মে বিক্রমপুরের (বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ) বাসাইলভোগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৪ সালে কলকাতার সওগাত পত্রিকাতে লেখালেখির মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ভারত বিভাজনের পর ঢাকা চলে আসেন। পাকিস্তান সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহমদ ১৯৪৮ সালে মূল ধারার সাংবাদিকতা শুরু করেন।কাজ করেছেন ইত্তেফাক, সংবাদ, আজাদ, পূর্বদেশসহ বিভিন্ন পত্রিকায়। পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালে এই বরেণ্য সাংবাদিকের হাত ধরেই পিকিং রেডিওতে বাংলাভাষার অনুষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়।
ভারত বিভক্তির পর ১৯৪৯ সালে পাকিস্তানের মুসলিম লিগের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন ফয়েজ আহমদ। সামরিক শাসক আইয়ূব খানের আমলে জেল খেটেছেন চারবছর।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগদান এবং বিভিন্ন প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রথম প্রধান সম্পাদক নিযুক্ত হন। পরে দৈনিক বঙ্গবার্তার প্রধান সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। তিনি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটেরও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ঢাকার প্রাচীন আর্ট গ্যালারী 'শিল্পাঙ্গণ'। তিনি প্রগতিশীল পাঠাগার 'সমাজতান্ত্রিক আর্কাইভ'-এর প্রতিষ্ঠাতা।
দেশ স্বাধীনের পর সাবেক সামরিক শাসক এরশাদের আমলে আর একবার কারাভোগ করেন। নব্বই এর দশকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় তখনকার বিরোধী দলের শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে একসাথে মুখোমুখি বসানোর পেছনে মুখ্য ভূমিকা রখেছিলেন এই সাংবাদিক।
জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচারের জন্য ১৯৯২ সালে গঠিত গণআদালতের ১১ জন বিচারকের অন্যতম ছিলেন ফয়েজ আহমদ।
ফয়েজ আহমদ প্রধানত শিশু-কিশোরদের জন্য ছড়া ও কবিতা লিখেছেন। তার বইয়ের সংখ্যা প্রায় একশ। ফয়েজ আহমদের বইগুলোর মধ্যে ’মধ্যরাতের অশ্বারোহী’ ছাড়াও ’সত্যবাবু মারা গেছেন’ ও ’নন্দনে নন্দিনী’ উল্লেখযোগ্য। বরেণ্য এ্ই সাংবাদিক বাংলা একাডেমি’ একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।