টিভি সিরিজ ‘আলিফ লায়লা’ ছিল এক কালে গ্রামবাংলার তুমুল জনপ্রিয় এক অনুষ্ঠান। নব্বই দশকের সেই টিভি সিরিজের তুখোড় অভিনেতা ছিলেন শাহনেওয়াজ প্রধান। ওই সিরিজ দিয়েই এ দেশের মানুষের একেবারে ঘরের মানুষ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সিরিজটির অন্যতম চরিত্র সিন্দবাদ এ অভিনয় করে শাহনেওয়াজ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। সেই শাহনেওয়াজ শুক্রবার মারা গেছেন। ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানা গেছে।
নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে শাহনেওয়াজ এ দেশে হয়ে উঠেছিলেন দর্শকের ‘বিনোদন বন্ধু’। তখন স্যাটেলাইট টেলিভিশন, ইন্টারনেটের বিস্তার ছিল না। তারপরও শাহনেওয়াজ প্রধান বাঙলার ঘরে ঘরে পৌঁছে যান বিটিভির মাধ্যমে। যার মূল কারণ টিভি সিরিজ ‘আলিফ লায়লা’।
খবরে বলা হয়, শুক্রবার মুম্বাইয়ে মারা গেছেন বাংলাদেশেও সমধিক জনপ্রিয় ভারতীয় এই অভিনেতা। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫৬ বছর বয়সী অভিনেতার মৃত্যু হয়। এদিন পুরস্কার নিতে মুম্বাইয়ে একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান চলাকালে হঠাৎ বুকে প্রচণ্ড ব্যথার কথা বলে মাটিতে লুটিয়ে পরে জ্ঞান হারান এই অভিনেতা। পরে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সিন্দাবাদখ্যাত অভিনেতা শাহনেওয়াজ প্রধানের আগে থেকেই হৃদ্রোগ ছিল। কয়েক মাস আগেই বাইপাস সার্জারি করা হয়েছিল। ছোট পর্দা থেকে শুরু করে বড় পর্দা—সব মাধ্যমেই অভিনয় করেছিলেন শাহনেওয়াজ। প্রধান প্রধান চরিত্রে তাঁকে দেখা না গেলেও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেও দর্শকের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন তিনি।
আরব্য রজনীর গল্প অবলম্বনে নির্মিত ভারতীয় টেলিভিশন ধারাবাহিক ‘আলিফ লায়লা’য় অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়া শাহনেওয়াজ কণ্ঠ–অভিনেতা হিসেবেও সমানভাবে জনপ্রিয় ছিলেন।
এ ছাড়া শাহরুখ খানের ‘রইস’, সাইফ আলী খানের ‘ফ্যান্টম’, ওয়েব সিরিজ ‘মির্জাপুর’-এ অভিনয় করেছেন শাহনেওয়াজ। শাহনেওয়াজ়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন তাঁর সতীর্থরা। ‘মির্জ়াপুর’–এ তাঁর সহ-অভিনেতা রাজেশ তৈলঙ্গ শোক প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, ‘শাহনেওয়াজ় ভাই, আপনাকে শ্রদ্ধা জানাই। অসাধারণ মানুষ ছিলেন। আমার স্মৃতিতে রয়ে যাবে “মির্জ়াপুর”-এর সেট। শুটিংয়ের দিনগুলো কত মজা করেছি! সত্যিই এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না।’