বেটা
একসময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাট থেকে মুম্বাই উড়ে গিয়েছিলেন। হিন্দি চলচ্চিত্রে বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় প্লেব্যাক সিঙ্গার হিমেশ রেশামিয়ার সঙ্গে গানের রেকর্ডও করেছিলেন। তবে যতটা সময় নিয়ে উঠেছিলেন, তার থেকে অনেক সময়ে পড়েছেন নীচে ফের! এখন এমন অবস্থা যে খাবারও জোটে না দু'বেলা। নিজের মুখেই সেকথা স্বীকার করে নিলেন রানু মণ্ডল। এসময় আফসোস করে বলেন, 'সবাই নিজের লাইক বাড়াতে আসে, কেউ খাবার আনে না।'
প্রায় প্রতিদিন এখনও রানু মণ্ডলকে কোনও না কোনও ইউটিউবারের চ্যানেলে দেখা যায়। তবে সেখানে তাঁকে দিয়ে গান গাওয়ানো, নাচ করানোর থেকে 'ভাঁড়ামো' বেশি হয় বলে মত নেট-নাগরিকদের। তাই তো 'লতাকণ্ঠী' ভাইরাল গায়িকার এখন দু'বেলা দু'মুঠো খাবার জোটে না।
ভারতীয় গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনকে রাণু সে প্রসঙ্গে জানান, “কোনও জানোয়ার একটু খাবার আনে না। শুধু লাইক পাওয়ার আশায় ভিডিয়ো করে। খিদেয় পেট তোঁ চোঁ করলে গলা দিয়ে আওয়াজ বেরবে কী করে।”
সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাড়ির বাইরে একটা মরচে পড়া টিউবওয়েল থেকে জল আনতে হয় বাড়িতে। কিন্তু গেট খুলে সেখানেও যেতে পারেন না। কারণ, গেট খুললেই ঢুকে আসে ইউটিউবাররা। মাঝে মাঝে খিদে-তেষ্টায় তিতিবিরক্ত হয়ে যখন গালাগালি দেন, থুতু ছেটান, তখন পাড়াপড়শিভাবে তিনি পাগল। মানসিক ভারসাম্য হারিয়েই এমন করছেন।
রানু মনে করেন, স্টেশনে স্টেশনে কাটানো আগের জীবনই ভালো ছিলো তার। তবে এখন আর আগের মত স্টেশনের সামনে বাটি হাতে বসতে পারেন না! বাড়ির বাইরে পা রাখলেও অনুরোধ ভেসে আসে 'একটা গান শোনান না'। কিন্তু খাবার দেয় না কেউ।
রানু মণ্ডলের বর্তমান অবস্থা এমন যে, সকালে লিকার চা-বিস্কুট খেয়ে পেট ভরান। দুপুরে ৫টাকার সেদ্ধ চাউমিন জোটে কোনও না কোনও দিন। আর রাতে বেশিরভাগ সময়তেই ঘুমোতে যেতে হয় খালি পেটে। হাল এতটাই খারাপ!
পশ্চিমবঙ্গের স্টেশনে স্টেশনে থাকতেন রানু মণ্ডল। পথে পথে ঘুরে বেড়ানোই ছিলো তার কাজ। লোকজন তাকে ‘পাগলি’ নামে ডাকতো। এই নারীই হঠাৎ করে ইন্টারনেটে আলোড়ন তৈরি করেন ২০১৯ সালে। ফিরে পান পরিবার। মুম্বাইতে ডাক পান। বলিউডের ছবিতেও গান করেন। এমনকি তাকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের কথাও সেসময় শোনা যায়।
‘বার্পেতা টাউন দ্য প্লেস অব পিস’ নামের এক ফেসবুক পেজের একটি ভিডিওর মাধ্যমে ছড়িয়ে যায় রানুর কণ্ঠ। ২০১৯ সালে প্রকাশিত সেই ভিডিওটিতে দেখা যায় রানু মণ্ডল লতা মঙ্গেশকরের গান গাইছেন। মিষ্টি এবং সুরেলা কণ্ঠে গাওয়া সেই গান মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। মুগ্ধ শ্রোতারা রানুর প্রশংসা করে শেয়ার করতে থাকে ভিডিওটি। গানের সূত্র ধরেই এই গাগলি রানুকে খুঁজে পায় তার মেয়ে। যাকে বহুদিন আগে হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।
তথ্যসূত্র: সংবাদ প্রতিদিন, হিন্দুস্তান টাইমস।
-20241121105543.jpg)
-20241027115010.png)
