সম্প্রতি ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়েছে শূন্য ব্যান্ডের গান ‘বেহুলা’। প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই প্রশংসা কুড়াচ্ছে গানটি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও চলেছে এই গান নিয়ে আলোচনা। শুধু তাই নয়, বর্তমান প্রজন্মের তরুনেরা নিজেদের মতো করে কভার করেছে গানটি। গানটি এমন জনপ্রিয়তা পাওয়ায় ব্যান্ডের সদস্যরা আনন্দিত এবং উৎসাহিত। শূন্য ব্যান্ডের বর্তমান লাইনআপ এমিল (ভোকাল), লাবিব (ড্রামস), মাইকেল (বেজ), ইশমাম (লিড গিটার)। ‘বেহুলা’ গানটির কথা লিখেছেন তানভীর চৌধুরী, ভিডিও বানিয়েছেন আন্তিক মাহমুদ।
এ পর্যন্ত শূন্যের পাঁচটি একক অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। কোনো গান থেকেই এত সাড়া পায়নি দলটি। ব্যান্ডের সদস্য এমিল বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করিনি, গানটা এত সাড়া ফেলবে। গানটি নিয়ে মানুষ কথা বলছে, প্রচুর কাভার হচ্ছে। পুরোনো বন্ধুরাও আমাদের গানটি নিয়ে কথা বলছে। আমরা অনেক খুশি ও সম্মানিত।’
এছাড়াও এত পুরোনো গল্প নিয়ে গান করার পরিকল্পনা নিয়ে কানাডা থেকে এমিল আরও বলেন, ‘ব্যান্ডের ৬ নম্বর অ্যালবামের কাজ করছি। সবাই মিলে ভেবেছি, ভিন্নধর্মী কী করা যায়। আমরা গানের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন গল্প তুলে ধরতে চেয়েছি। বছরের শুরুতে “বিবিয়া” প্রকাশ করেছি। এটা ছিল এক মাঝির গল্প। জীবনের অনেক ঝুঁকির মধ্যে আয়-রোজগার করে তারা। “বেহুলা” বাংলার লোকগল্প, যেটা ছোটবেলা থেকে আমরা শুনে আসছি। গানে লখিন্দরের জায়গা থেকে বলার চেষ্টা করেছি। সাধারণভাবে আমরা দেখি, নারীদের অনেকভাবে উপস্থাপন করা হয়, কখনো প্রেয়সী, কখনো পাষাণী। মেয়েদের খুব কমই কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে। অসম্ভব যাত্রার মাধ্যমে বেহুলা যে লখিন্দরকে ফিরিয়ে এনেছেন, তাই তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চেষ্টা করেছি। শুধু বেহুলা-লখিন্দর নন, যারা প্রিয় মানুষকে খুশি করার জন্য অসম্ভবকে সম্ভব করেন, যুদ্ধ করেন, তাঁদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চেয়েছি।’
এদিকে জনপ্রিয় গায়ক তাহসান এবারই প্রথম লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন একুশে বইমেলায়। আগেই বলে রেখেছিলেন, নিজের অটোগ্রাফসহ কিছু বই পাঠকের হাতে তুলে দেবেন। সেই বইগুলোর অটোগ্রাফ দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন তিনি। সেখানেও বাজতে শোনা গেছে ‘বেহুলা’ গানটি। এর প্রশংসা করে তাহসানও বলেন, ‘অনেক দিন পর একটা সুন্দর গান পেলাম। আমাদের দেশে এখন ভালো গান খুব একটা হয় না। সবাই গানটি শুনবেন।’
ইউটিউবে আজ ২৯ মার্চ সকাল পর্যন্ত ভিউ ছাড়িয়েছে ৩৩ লাখের বেশি। ১৫ হাজারের বেশি মন্তব্য এসেছে গানটিতে, লাইক পড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার। গানটি দর্শকের মন এতটাই ছুয়েছে যে তারা নিজের আবেগ প্রকাশ করেছে কমেন্টের মাধ্যমে। একজন শ্রোতা কমেন্টে লিখেছেন, ‘আমি একজন ক্যানসার রোগী। করোনায় টানা কয়েক মাস হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসাধীন ছিলাম। অসুস্থতায় আমার দিন-রাতের কোনো পার্থক্য ছিল না। কিন্তু আমার সঙ্গে একজন বেহুলা (আমার ওয়াইফ) ছিল। একটা রুমে জাগতিক সবকিছু বাদ দিয়ে কীভাবে কয়েকটা মাস ছিল। এই সময়ে তার ছোট ভাই দুর্ঘটনায় মারা যায়। আমাকে ছেড়ে যেতে হবে বলে শেষযাত্রায় যেতে পারেনি। যদি সাধ্য থাকত, সুন্দর এ গান আমি আমার প্রিয়তমা বেহুলাকে উৎসর্গ করতাম।’