অভিনয়শিল্পী হিসেবে স্বপ্নবাজ রুনা খান। তাইতো, অল্পদিনেই মঞ্চ এবং টেলিভিশনের পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন তিনি। ‘গহীন বালুচর’, ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’, ‘ছিটকিনি’— এমন বহু ছবিতে তাঁর অভিনয় দর্শকের নজর কাড়ে।
নানা গুণে গুণবতী রুনা খান ফিটনেসের ব্যাপারেও ভীষণ সচেতন। এক বছর আগেও যাঁরা দেখেছেন, এখনকার রুনা খানকে দেখে তাঁরা চমকে যান। এক বছরে ৩৯ কেজি ওজন কমিয়ে পুরোপুরি বদলে নিয়েছেন নিজেকে। কিন্তু কীভাবে?
সম্প্রতি এনিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কথা বলেছেন রুনা খান। জানিয়েছেন তাঁর ওজন কমানোর রেসিপি।
রুনা খান জানান, এক যুগ আগে অভিনেত্রীর ওজন ছিল ৫৬ কেজি। ২০০৯ সালে সাত পাকে বাধা পড়েন অভিনেত্রী। ২০১০-এ মা হন নায়িকা। তারপরই আসে জীবনে নতুন চ্যালেঞ্জ। সন্তান হওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই মেয়েদের ওজন বেড়ে যায়। নায়িকার ওজন বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৯৫ কেজি। সন্তান জন্মের এক বছর পর মানে ২০১১ সাল থেকে ওজন কমানোর মিশন শুরু হয়। কিন্তু কোনোভাবেই পারছিলেন না। একটা পর্যায়ে ওজন গিয়ে ঠেকে ১০৫ কেজি পর্যন্ত। ওজন কমাতে একাধিক জিম, প্রশিক্ষকের শরণাপন্ন হন। শুরু করেন সুইমিং। ভর্তি হন ইয়োগা ও অ্যারোবিকস ক্লাসে। ডায়েট খাবার খাওয়া শুরু করেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। সবকিছু ছেড়ে দেন।
তবে ৩৯ কেজি কমানো সম্ভব হলো কী করে? অভিনেত্রী বললেন, ‘ওজন কমানোর জার্নিটা আসলে এক বছরের। এক বছরে আমি একটি পয়সাও ওজন কমানোর পেছনে খরচ করিনি। আমার বাড়িতে প্রতিদিন যে স্বাভাবিক খাবার রান্না হয়, সেখান থেকে পরিমিত খাবার খেয়েছি। সপ্তাহে এক দিন পোলাও অথবা তেহারি খাই। খুব ভালো লাগে। পছন্দের খাবার। এক বেলা এসব খাবার খেলেও বাকি দুই বেলা রুটিনের খাবারই থাকে। আর আমি আমার বাসার শোবার ঘর থেকে ড্রয়িংরুম পর্যন্ত প্রতিদিন নিয়ম করে এক ঘণ্টা হাঁটতাম। রাতে এক ঘণ্টা ইয়োগা করি। রাত ১২টা কিংবা ১টার মধ্যে ঘুমিয়ে যাই, কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমাই। গত ১০ বছরে এসব পারিনি। আমার কাছে পৃথিবীর একদম সহজ উপায়। সহজ কাজটা গত এক বছর ধরে করতে পেরেছি। গত বুধবার পর্যন্ত ৩৯ কেজি ওজন কমাতে পেরেছি।’
ওজন কমাতে খাবারের তালিকা
ওজন কমাতে খাওয়ার এক তালিকাও দিয়েছেন রুনা খান। জানালেন, খাবারের প্রতিদিনের তালিকায় সকালে ছিল দুটি ডিম। এরপর যেকোনো ফল। পরে ব্ল্যাক কফি খেয়ে এক ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি।
দুপুরে এক কাপ ভাত, সঙ্গে এক বাটি ভরা সবজি, বড় এক পিস মাংস অথবা মাছ। বিকেলে মুঠো পরিমাণ বাদাম, ব্ল্যাক কফি ও এক ঘন্টা ইয়োগা।
রাতে বড় এক বাটি সবজি, এক পিস মাছ অথবা মুরগি, এক গ্লাস দুধ।
ব্যর্থতার কারণ
যোগাসন, অ্যারোবিক্স, সুইমিং ,কী করেননি। কিন্তু কোনও কিছুতেই কাজ হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, আসলে এই সব করে কোনও কিছুই লাভ হয়নি। এই কয়েক বছরে তাঁর উপলব্ধি এই কয়েক দশকে যে সব টক্সিক মানুষের সংসর্গে ছিলেন, তাঁদের সঙ্গ ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েই তিনি ফিট হয়ে গিয়েছেন। সঠিক পরিবেশই হল নিজেকে সুস্থ রাখার মূলমন্ত্র এমনটাই বিশ্বাস নায়িকার।
অবশেষে সফলতা
অবশেষে সফল হলে রুনা খান। এক ধাক্কায় কমিয়ে ফেললেন ৩৯ কেজি। অভিনেত্রী বলেন, আমার সঙ্গ তাড়াতে লেগেছে ১০ বছর, আর ওজন কমাতে লেগেছে মাত্র ১ বছর। দুই দশকের কয়েকজন বন্ধুর কারণে জীবনের এত বড় ট্রমায় যেমন রুনা খান পড়েছেন তেমনি এই এক বছরের জার্নিতে নতুন কিছু বন্ধুকে পাশে পেয়েছেন; যারা তাঁর জীবনে আশীর্বাদও। রুনা খানের ভাষায়, দে ব্রিং হ্যাপিনেস ইন মাই লাইফ।