তিন অভিযোগ নিয়ে দুদকের প্রতিনিধিদল বিসিবিতে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ১৫, ২০২৫, ০৫:৪৭ পিএম

তিন অভিযোগ নিয়ে দুদকের প্রতিনিধিদল বিসিবিতে

ছবি: সংগৃহীত

আগে থেকে খবরটা জানা ছিল না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দায়িত্বশীলদের। মিরপুরে বিসিবি কার্যালয়ে আজ দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তাদের আকস্মিক আগমন তাই কিছুটা হলেও হতচকিত করেছে বোর্ড কর্মকর্তাদের।

মূলত তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে বিসিবির কাছে তথ্যাদি চাইতে বিসিবি কার্যালয়ে যায় দুদকের প্রতিনিধিদল। বিসিবির আয়োজনে মুজিব শতবর্ষ উদ্‌যাপনের খরচের হিসাব, তৃতীয় থেকে দশম আসর পর্যন্ত বিপিএলের টিকিট বিক্রির হিসাব ও তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেটের এন্ট্রি ফির অনিয়ম নিয়েই আপাতত তাদের তদন্ত। খবর প্রথম আলো।

দুদক কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেছেন, এই তিনটি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তারা বিসিবির কাছে তথ্যাদি জানতে চেয়েছেন।

বিসিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে নিজেদের চাহিদা জানানোর পর সংবাদমাধ্যমকে দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন বলেন, ‘মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠান আয়োজনে প্রায় ২৫ কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছিল। তবে অভিযোগ আছে, এর মধ্যে মাত্র ৭ কোটি টাকার খরচ দেখানো হয়। বাকি ১৯ কোটি টাকার মতো খরচের হিসাব দেওয়া হয়নি।’ এ ব্যাপারে বিসিবির ফাইন্যান্স বিভাগের কাছে তথ্যাদি চেয়েছেন তারা। এ ছাড়া টিকিট বিক্রি থেকে প্রায় ২ কোটি টাকা আয় হয়েছে বলেও জেনেছে দুদক, যেটার হিসাব দেখানো হয়নি। সেটিসহ ২০ কোটি টাকার বেশি গরমিল থাকতে পারে।

বিপিএলের টিকিট বিক্রির আয়েও গরমিলের অভিযোগ পেয়েছে দুদক এবং প্রাথমিকভাবে এখানে তারাও অসংগতি দেখতে পেয়েছে বলে জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে দুদক কর্মকর্তারা জানান, বিপিএলের ১১তম আসরেই যেখানে ১৩ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে, সেখানে তৃতীয় থেকে দশম আসর পর্যন্ত আট মৌসুমে টিকিট বিক্রি থেকে মোট আয় দেখানো হয় মাত্র ১৫ কোটি টাকা। দুদক কর্মকর্তারা বলেন, বিসিবির কাছ থেকে তারা তথ্য পেয়েছেন, আগে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে বিসিবি চুক্তি করত এবং ওই চুক্তি অনুযায়ী টিকিট বিক্রি করত। টিকিট বিক্রি থেকে নির্দিষ্ট একটা অঙ্ক বিসিবিকে দিত, যেটা তাদের আয় হিসাবে ধরা হতো।

সাবেক বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান দায়িত্বে থাকার সময় তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেটের এন্ট্রি ৫০ হাজার থেকে একলাফে ৫ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। এতে প্রতিযোগিতা থেকে সরে যায় প্রায় সব দলই। প্রতিবছর দুটি করে দল উচ্চ এন্ট্রি ফি দিয়ে নামমাত্র প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। এ নিয়েও অভিযোগের তদন্ত করবে দুদক।

দুদক কর্মকর্তারা বলেন, এন্ট্রি ফি বাড়িয়ে দেওয়ায় গত কয়েক বছরে এ প্রতিযোগিতায় ২-৩-৪টি করে দল অংশ নিত। এবার এন্ট্রি ফি কমিয়ে ১ লাখ টাকা করায় ৬০টি দল অংশ নিতে পেরেছে। তাদের মনে হয়েছে, আগে অংশগ্রহণের স্বাধীনতা না থাকায় বা কোনো ধরনের চাপ থাকাতেই দলগুলো আসেনি। এখানে কোনো অসংগতি থাকলে সেটিও যাচাই করে দেখবে দুদক।

এক প্রশ্নের জবাবে দুদকের সহকারী পরিচালক বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তারা বিসিবির কাছে ওই তিনটি বিষয়ে তথ্যাদি চেয়েছেন। এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমকে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘তারা কিছু বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত চেয়েছেন। আমরা আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে বলেছি তাদের সহযোগিতা করার জন্য।’ অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যানেজমেন্ট টিম বিসিবির পরিচালনা পরিষদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করি এবং বোর্ডের কার্যক্রম পরিচালনা করি। আমাদের কাজ হচ্ছে বোর্ডের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা।’

Link copied!