জুন ১৩, ২০২৫, ০৩:২৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
অনেকটা চমকের জন্ম দিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর জায়গায় ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজকে বেছে নিয়েছে বিসিবি। নেতৃত্বের এই রদবদলের প্রক্রিয়ায় কিছু বিতর্ক দেখা দিলেও মিরাজের আশা, শান্তর কাছ থেকে পূর্ণ সাহায্য পাবেন তিনি।
বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে একসঙ্গে খেলছেন মিরাজ ও শান্ত। ২০১৬ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে শান্তর অধিনায়ক ছিলেন মিরাজ। জাতীয় দলে ঢোকার পর আবার গত প্রায় তিন বছর শান্তর নেতৃত্বে খেলেছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কা সফরের টেস্টের পর ওয়ানডে সিরিজেও সেটিই হওয়ার কথা ছিল।
হুট করেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শান্তকে ওয়ানডের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার খবর জানায় বিসিবি। এর আগে দুপুরে বোর্ড পরিচালকদের জরুরি জুম মিটিংয়ে নেওয়া হয় অধিনায়ক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত।
তখনই প্রথম অধিনায়কত্ব পাওয়ার বার্তা পান মিরাজ। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক নিজেই।
“গতকাল (ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন) ফাহিম স্যার ডেকে নিয়ে বলেছেন, ‘তোমাকে আমরা এরকম দায়িত্ব দেওয়ার কথা চিন্তা করছি। খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেহেতু সামনে খেলা আছে, ওয়ানডে দলটা ঠিক করতে হবে। আমরা সেভাবে পরিকল্পনা করছি।` তখন তিনি আমাকে জানিয়েছেন (অধিনায়কত্বের কথা)।”
বিসিবির বিবৃতিতে মিরাজকে দায়িত্ব দেওয়ার পেছনে নিজেদের ভাবনা জানান নাজমুল। তবে হুট করেই শান্তকে সরিয়ে দেওয়ার পেছনে বোর্ডের ভাবনা কী ছিল, সেই ব্যাখ্যা দেননি।
মিরাজেরও ধারণা নেই কী কারণে অধিনায়ক বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। তবে সামনেও যদি এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেই ব্যাপারে আগে থেকেই মানসিক প্রস্তুতি রাখছেন ২৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডার।
“আমি জানি না, তারা (বোর্ড) কীভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি যতটুকু জানি বোর্ড সভার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত হয়। কেউ একা নিতে পারে না। অনেক সময় পরিস্থিতি তো ঘটে। আমরা সবাই সবসময় সেভাবে মানসিক প্রস্তুতি নেই।”
এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, বোর্ডের এমন আচমকা সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেননি শান্ত। এমনকি টেস্টের দায়িত্বও ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন তিনি।
মিরাজের সংবাদ সম্মেলনে তাই প্রশ্ন ওঠে, অধিনায়কত্ব বদলের প্রক্রিয়ার নেতিবাচক প্রভাব দলের মধ্যে পড়বে কিনা? উত্তরে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার জানালেন, শান্তর কাছ থেকে পূর্ণ সমর্থন পাওয়ার বিশ্বাস আছে তার।
“আমার মনে হয়, ড্রেসিং রুমে এরকম কোনো প্রভাব পড়বে না। দিন শেষে সবাই দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলি। শান্ত ও আমার মধ্যে এগুলো কখনোই কাজ করবে না। ও যখন অধিনায়কত্ব করেছে, আমি অনেক সাহায্য করেছি। আশা করি, সেও আমাকে করবে। ওর সঙ্গে আমার এই কথাই হয়েছে।”
“ও আমাকে একটা কথা বলেছে, ‘অধিনায়কত্ব নিয়ে আমি কখনও আলাদা কিছু ফিল করিনি।’ আশা করি আমার ভেতরেও এই জিনিসটা আসবে না। বাংলাদেশের হয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। একটা ভালো জায়গায় বাংলাদেশকে দাঁড় করাতে চাই।”
ওয়ানডেতে গত কয়েক বছর ধরে ধুঁকছে বাংলাদেশ। হতাশার প্রায় চরম সীমায় নেমে এখন আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের দশ নম্বরে অবস্থান করছে তারা।
সাম্প্রতিক সময়ের এই ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে সদ্য সাবেক অধিনায়ক শান্তর সঙ্গে মিলে কাজ করতে চান মিরাজ।
“(শান্তর সঙ্গে) কথা হয়েছে। ওর সঙ্গে ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে ক্রিকেট খেলছি। অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে একসঙ্গে আছি। আমাদের যে জিনিসটা মনে হয়, অধিনায়ক তেমন ম্যাটার করে না। দল হয়ে খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ।”
“ওর সঙ্গে যখনই কথা হয়েছে, দুজনে এটাই আলোচনা করেছি বাংলাদেশকে কত দূর নিয়ে যেতে পারি। সিনিয়র ক্রিকেটার যারা ছিলেন তারা একটা পর্যায়ে এনেছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব, বাংলাদেশ দলকে একটা জায়গায় দাঁড় করানোর। এখন একটু খারাপ সময় যাচ্ছে। আশা করি এটা দ্রুত কেটে যাবে ইনশাল্লাহ।”