শুরু হলো অগ্নিঝরা উত্তাল মার্চ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ১, ২০২১, ১২:০২ এএম

শুরু হলো অগ্নিঝরা উত্তাল মার্চ

শুরু হলো অদম্য সাহস আর আত্মপ্রত্যয়ের অগ্নিঝরা মার্চ। বাঙালির স্বাধীনতা ও গৌরবগাঁথার মার্চ মাসের প্রথম দিন আজ। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাঙালির জীবনে নানা কারণে এ মাস অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস। অসংখ্য ঘটনার উজ্জ্বল সাক্ষী। এ মাসেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই মাসের ২৫ তারিখ থেকে লেখা শুরু হয়েছিল এক অমর মহাকাব্য, যার নাম বাংলাদেশ।

মার্চের শুরুতেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ঐক্যবদ্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ স্বাধীনতার অমর কাব্যের এই পঙতি বাঙালি জাতিকে ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তায় ঐক্যবদ্ধ ও বলীয়ান করে তোলে।

বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি শাসকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। মরতে যখন শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি, আরো দেবো। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো- ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’

বঙ্গবন্ধুর ডাকে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য যে আগুন জ্বলে উঠেছিল- সে আগুন যেন ছড়িয়ে পড়ে বাংলার সর্বত্র। এরপর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সিঁড়ি বেয়ে একাত্তরের মার্চ বাঙালির জীবনে নিয়ে আসে নতুন বার্তা।

বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হচ্ছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এই ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক-রাজনৈতিক স্বপ্নসাধ পূরণ হয় এ মাসে।

এই মার্চেই পাকিস্তানকে বাঙালি বিদায় সম্ভাষণ জানায়। পাকিস্তানি সৈন্যরা ২৫ মার্চ রাতে অতর্কিতে বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এইদিনে বাঙালি জাতির জীবনে এক বিভীষিকাময় রাত নেমে আসে। মধ্য রাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্ব পরিকল্পিত হামলা চালায়।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে নিরীহ বাঙালি নিধন শুরু করে পাক হানাদার বাহিনী। এরপর শুরু হয় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে ১১টি সেক্টরে হানাদারদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিকামী জনতা। শহীদ হয় ৩০ লাখ মানুষ। দীর্ঘ ৯ মাসের এই যুদ্ধই বাঙালিকে এনে দেয় নতুন মানচিত্র। পৃথিবীর বুকে যুক্ত হয় নতুন রাষ্ট্র, বাংলাদেশ।

কথিত তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে ৪৭ বছরে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর এক বিস্ময়। বেড়েছে অর্থনৈতিক সক্ষমতা, মানুষের গড় আয়ু, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব নাগরিক সুবিধা। শুধু তাই নয়, এরইমধ্যে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে লাল-সবুজের এই বৃহত্তম বদ্বীপ।

 

 

Link copied!