৫ ব্যাঙ্কের সমন্বিত নিয়োগ: প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ একাধিক অনিয়মের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নাকচ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ৬, ২০২১, ০৮:৪৭ পিএম

৫ ব্যাঙ্কের সমন্বিত নিয়োগ: প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ একাধিক অনিয়মের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নাকচ

ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যভুক্ত পাঁচটি ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) পদের এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ। এ পরীক্ষাকে ঘিরে প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে আজ পাঁচ ব্যাঙ্কের চাকরির পরীক্ষাটির উত্তর সম্বলিত একটি কাগজের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। দাবি করা হয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্বেই এর উত্তর ফাঁস হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও পরীক্ষাটিকে ঘিরে আরও বিভিন্ন ধরণের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে আজকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা মোহাম্মদ আকরাম খান নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক শিক্ষার্থী দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, আমি পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর শুনেছি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই উত্তরপত্র সহ একটি ছবি ফাঁস হয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রচণ্ড রকম হতাশ লাগছে। তবে আমি যেহেতু পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে ছবিটি দেখিনি সেহেতু এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।তবে মোহাম্মদ আকরাম খান অন্য একটি বিষয়ে অভিযোগ করেন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, খিলগাঁও মডেল হাই স্কুলের পুরাতন ভবনের ৪০১ নম্বর রুমে তার পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছিলো। সেখানে পরীক্ষা শুরু কিছুক্ষণ পরে একজন নারী পরীক্ষার্থী ভুল প্রবেশপত্র নিয়ে এসেছেন বলে তার ওএমআর শিট সাথে নিয়ে বের হয়ে যান। এবং কিছুক্ষণ পরে সেই নারী পরীক্ষার্থী আবার প্রবেশ করেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এভাবে প্রমাণসহ ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। 

তিনি অভিযোগ করেন, ওই নারী ভুল প্রবেশপত্র যদি নিয়ে থাকেন, তবে তিনি ওএমআর শিট কিভাবে পেলেন। পরীক্ষায় ওই রুমে যিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলো, তিনি ওই নারীকে পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি দিতে না চাইলেও বাইরে থেকে আরেকজন এসে ওই নারী পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ প্রদান করেন। অনিয়ম না হলে এ ঘটনা কিভাবে ঘটলো বলে আকরাম মন্তব্য করেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের এবং খিলগাঁও মডেল হাই স্কুলের এ ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দাবি করেন এ ধরণের ঘটনা ঘটার কোন সুযোগ নেই।

মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের অধীনে যে চাকরির পরীক্ষাগুলো হয় সে পরীক্ষাগুলোর প্রতিটি কেন্দ্রে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকেন। তাদের উপস্থিতিতে সিলগালা করা প্রশ্ন খুলতে হয়। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপানোসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সাবধানতা এবং স্বচ্ছতা অবলম্বন করা হয়। পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

এভাবে ছাপিয়ে উত্তরপত্র সরবরাহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেক পরীক্ষার্থী।

পরীক্ষা একবার শুরু হওয়ার পর কেন্দ্রের বাইরে কোন পরীক্ষার্থীর যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। বাইরে থেকে কোন জিনিসপত্রও পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতরে নিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ থাকেনা। এ সকল ব্যাপার বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক খুব কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন।

তবে এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চাকরিপ্রার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপগুলোতে ঘুরে দেখা যায় অনেকেই ছবিটি পোস্ট করে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ এবং হতাশা প্রকাশ করছেন। পরীক্ষা নেয়ার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক চাকরির নিয়োগ পরীক্ষাতে অনিয়ম করার অভিযোগ তুলছেন অনেকে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের মুখপাত্র বলেন, যেহেতু প্রশ্নফাসের কোন ঘটনা ঘটেনি, কাজেই বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করারও প্রশ্ন আসেনা। আর কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সাধারণত যখন কোন প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে বিড করে, তখন তার বিডিং মূল্যায়ণ করে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয় এবং পরবর্তী পারফরম্যান্স বিবেচনা করা হয়। কাজেই এখানেও ত্রুটি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

Link copied!