অক্টোবর ২৩, ২০২৪, ০১:১৭ পিএম
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে অবস্থান নিয়ে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। পরে দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আরও বেশকয়েকটি দাবি উত্থাপন করে একটি স্মারকলিপি দেন সমন্বয়কেরা।
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘রায়হান-সাকিব-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘লেজড়বৃত্তিক রাজনীতি, চলবে না চলবে না’, ‘দড়ি ধরে মারো টান, চুপ্পু হবে খান খান’, ‘এক দুই তিন চার, চুপ্পু তুই গদি ছাড়’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যুতে মো. সাহাবুদ্দিন বক্তব্য দিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে। এ ছাড়া ছাত্রলীগকে ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ এবং সর্বস্তরের আওয়ামী সন্ত্রাসী ও কুশীলবদের বিচার করতে হবে। এই দেশে যারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, তাদের অপচেষ্টা কখনোই সফল হতে দেওয়া যাবে না।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, ‘আপনি (মো. সাহাবুদ্দিন) ঘোষণা দিয়েছেন যে শেখ হাসিনা আপনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেয় নাই, বিষয়টি নিয়ে আপনি কী ইঙ্গিত করতে চাচ্ছেন? আমরা স্পষ্ট ঘোষণা দিতে চাই, কোনো অবস্থাতেই আর কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র হতে দেওয়া হবে না। কুমিল্লা সীমান্তে আপনারা এক হয়ে এই দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার যে চেষ্টা করছেন, আপনাদের এই অপচেষ্টা কখনোই সফল হতে দেওয়া হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই অভ্যুত্থানে দুই হাজারের অধিক শহীদ হয়েছে প্রয়োজনে লাখো শহীদ হবে। আর কোন অবস্থাতেই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকার এই দেশের মাটিতে পা রাখতে পারবে না। আওয়ামী লীগের এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই। আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। এই দাবিতে যদি প্রথম শহীদ হতে হয়, সেই শহীদ যেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই হয়।’
আরেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোসররা বিভিন্ন সময় আমাদের আন্দোলনকে উৎখাত করার চেষ্টা করেছে। আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দিয়েছে। আমরা রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনি যদি কোনো স্বৈরতন্ত্রে লিপ্ত হন, তাহলে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করুন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নয় দফা দাবির মধ্যে একটা ছিল, ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। এই ক্যাম্পাসে শোডাউনের রাজনীতি, হল দখলের রাজনীতি, গেস্টরুমের রাজনীতি আর হতে দেওয়া যাবে না। আওয়ামী সরকারের দোসরেরা এখনো ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের পরীক্ষা দিতে সাহায্য করছে। আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই তাঁদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
বিক্ষোভ সমাবেশে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।