নোবেলকেই সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত পুরস্কার হিসেবে গণ্য করা হয়। সেই পুরস্কার পেয়েও ফিরিয়ে দেবেন— এমনটি অনেকে ভাবতেও পারেন না। বিষয়টি বিস্ময়কর মনে হতে পারে কিন্তু এমন ঘটনাও ঘটেছে। বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক এই পদক বিজয়ী হয়েও অনেকের সেটা ছুঁয়ে দেখার সুযোগ হয়নি। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যানও করেছেন। এমনই দু’জন ব্যক্তিত্ব ফরাসি দার্শনিক জ্যঁ পল সার্ত্রে এবং ভিয়েতনামের সংগ্রামী রাজনীতিবিদ লে দুক তো। নোবেলের দীর্ঘ ইতিহাসে কেবল এই দুজনই স্বেচ্ছায় পুরস্কারটি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
জ্যঁ পল সার্ত্রে
ফরাসি দার্শনিক-সাহিত্যিক জ্যঁ পল সার্ত্রের অসাধারণ আত্মজীবনী লে মো। এই বইয়ের সূত্রে ১৯৬৪ সালে তাঁকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। কারণ হিসেবে জানান, বর্তমানে নোবেল এমন এক সম্মান, যা পাশ্চাত্যের লেখক এবং প্রাচ্যের বিপ্লবীদের বাক্রুদ্ধ করে দেয়। তিনি আরও বলেন, আলজেরিয়ায় যুদ্ধ চলাকালে তাঁরা ১২১ জনের স্বাক্ষরিত বক্তব্য প্রকাশ করেছিলেন, তখন তাঁদের পুরস্কার দেওয়া হয়নি। দিলে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে সম্মানিত করা হয়েছে বলে তাঁরা তা গ্রহণ করতেন। সংগ্রামের শেষে পুরস্কৃত হতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
লে দুক তো
১৯৭৩ সালে ভিয়েতনামের বিপ্লবী নেতা লে দুক তো এবং মার্কিন জাতীয় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জারকে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে নোবেল কমিটি। কিন্তু লে দুক পুরস্কার নিতে অসম্মতি জানান। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ভিয়েতনামে প্রকৃত শান্তি ফিরে আসেনি। যেহেতু শান্তিই প্রতিষ্ঠা হয়নি, সেহেতু তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখার জন্য পুরস্কার গ্রহণ করতে পারেন না।
এই দু’জন ছাড়াও বার্ট্রান্ড রাসেল নোবেল নিতে অসম্মতি জানিয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তী সময়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তা গ্রহণ করেন। অন্যদিকে সোভিয়েত সরকারের চাপে পড়ে রুশ সাহিত্যিক বরিস পাস্তেরনাক সাহিত্যে নোবেল পেয়েও নিতে পারেননি।