অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিয়া জেমসের দায়ের করা মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক তথ্য জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছেন নিউইয়র্কের একটি আদালত। বিচারক জানিয়েছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প বছরের পর বছর তাঁর রিয়েল এস্টেট ব্যবসাসংক্রান্ত তথ্য জালিয়াতি করেছেন এবং এই ব্যবসা তাঁকে খ্যাতি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির শিখরে পৌঁছে দিয়েছিল। শাস্তি হিসেবে নিউইয়র্কে ট্রাম্পের বেশ কিছু ব্যবসার লাইসেন্স বাতিল করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার বিচারক আর্থার অ্যাঙ্গরন রায়ে বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রতিষ্ঠান তাদের সম্পদের অতি মূল্যায়নের মাধ্যমে ব্যাংক, ইনস্যুরেন্স ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে প্রতারিত করেছেন। সম্পদের মূল্য বেশি দেখিয়ে ট্রাম্প ও তার প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন চুক্তি করেছেন এবং ঋণ নিয়েছেন।
অ্যাঙ্গরন তাঁর রায়ে এই অপরাধের শাস্তি হিসেবে নিউইয়র্কে ট্রাম্পের বেশ কিছু ব্যবসার লাইসেন্স বাতিল করার আদেশ দিয়েছেন। এই রায়ের ফলে নিউইয়র্কে ট্রাম্পের পক্ষে ব্যবসা পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে উঠবে। বিচারক আরও বলেছেন, তিনি ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের কার্যক্রমের ওপর নজরদারি চালিয়ে যাবেন।
এই রায়ের পর এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি ট্রাম্পের প্রতিষ্ঠান। তবে ট্রাম্প অনেক আগে থেকেই এই মামলার বিষয়ে বলে আসছেন, তিনি কোনো ভুল করেননি।
এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন লেটিয়া জেমস। ট্রাম্পের পারিবারিক কোম্পানি ‘ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের’ সম্পদের ব্যাপারে কয়েক বিলিয়ন ডলারের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য প্রদানের অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়।
এই মামলায় ট্রাম্পের পাশাপাশি তাঁর তিন সন্তান ডোনাল্ড জুনিয়র, ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও এরিক ট্রাম্পকেও আসামি করা হয়। এ ছাড়া মামলায় ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের দুই নির্বাহী অ্যালেন ওয়েইসেলবার্গ এবং জেফরি ম্যাককনিকেও আসামি করা হয়েছে। লেটিয়া জেমস ও তাঁর প্রতিষ্ঠান মিলে গত তিন বছর ধরে তদন্ত চালিয়ে ট্রাম্পের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তথ্য জালিয়াতির প্রমাণাদি সংগ্রহ করেছেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁদের প্রতিষ্ঠানের সম্পদ কমিয়ে দেখাতে দুই শতাধিক ভুয়া মূল্যায়ন ও আর্থিক বিবরণী তৈরি করেছিলেন। ঋণ প্রাপ্তি ও কম ট্যাক্সের সুবিধা পেতে ট্রাম্পের প্রতিষ্ঠান তাদের সম্পত্তির আর্থিক মূল্য নিয়ে এসব মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। মামলার কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, ২০১১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি আরও অসংখ্য জালিয়াতি করেছে।