পর্নোতারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে নিয়ে বেশ ঝামেলা পোহাচ্ছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাবেক ওই পর্নোতারকাকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হন ট্রাম্প। মার্কিন ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনো প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি মামলায় আদালতে হাজির হন। গ্রেপ্তারের ঘণ্টাখানেক পর অবশ্য ছাড়াও পান ট্রাম্প।
তবে স্টর্মি ছাড়া এদিন নতুন আরেক নারী মডেলের নাম চলে আসে। ওই মডেলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়ানো এবং অর্থ দিয়ে তার মুখ বন্ধের অভিযোগ উঠেছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
ম্যানহাটানের আদালতে শুনানি চলাকালে কৌঁসুলিরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে আরও এক নারীর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলে জানান এবং তারা ওই নারীর নামও প্রকাশ করেন। বিষয়টি সামনে আসার পর ট্রাম্পকে নিয়ে মার্কিন রাজনীতি এখন বেশ সরগরম।
সাবেক প্লেবয় মডেলের ওই নারীর নাম কারেন ম্যাকডুগাল।পর্নোতারকা ড্যানিয়েলসের মতো ট্রাম্পের সঙ্গে তারও সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেছেন তিনি।
জানা যায় দীর্ঘ ১০ সম্পর্কে ছিলেন ট্রাম্প ও ম্যাকডুগাল। ট্রাম্প বিবাহিত হলে ঘরসংসার সামলে তিনি মাসে অন্তত পাঁচ দিন দেখা করতেন ওই নারীর সঙ্গে।
ইন্ডিয়ানাতে জন্ম নেওয়া লাস্যময়ী মডেল ম্যাকডুগাল মাত্র ২০ বছর বয়সে মডেলিং শুরু করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি প্লেবয়ে যোগ দেন। প্রখ্যাত পামেলা অ্যান্ডারসনের পরে দ্বিতীয় নারী হিসেবে প্লেমেট অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। একজন কলামিস্ট ও অ্যাডভোকেট হিসেবেও সফল ম্যাকডুগাল।
১৯৯৯ সালে পুরুষদের ফিটনেস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে প্রথম নারী হিসেবে তাকে দেখা যায়। মডেলিংয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন ও টিভিতেও দেখা গেছে তাকে। মডেলিংয়ে দারুন সফল হলেও অভিনেত্রী হিসেবে বেশি দূর এগোতে পারেননি।
২০০৬ সালে নিউ ইয়র্কার ম্যাগাজিনকে ম্যাকডুগাল জানান, তিনি লস অ্যাঞ্জেলেসের প্লেবয় ম্যানশনে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেখানে দ্য অ্যাপ্রেন্টিসের একটি পর্বের শুটিং ছিল তার। ট্রাম্প প্রথম দেখাতেই মুগ্ধ হন, আর ম্যাকডুগালের রূপের প্রশংসা করতে শুরু করেন। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ম্যাকডুগাল বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর প্রেমময় সম্পর্ক ছিল। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই দাবিকে অসত্য বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ম্যাকডুগালকে দেড় লাখ ডলার দেয় ন্যাশনাল এনকোয়ারার নামের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকা। ম্যাকডুগালের সাথে পত্রিকার চুক্তি ছিল- ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি খোলামেলাভাবে ফাঁস করবেন এবং সম্পর্কের বিষয়ে প্রকাশ্যে আর কোথাও কিছু বলবেন না। তবে ট্যাবলয়েডটি সেই সাক্ষাৎকার অবশ্য কখনো ছাপেনি।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নেতিবাচক খবর বন্ধ করিয়ে রাখতে সংবাদপত্রটি কৌশলে কাজটি করেছিল বলে মনে করেন ম্যাকডুগাল। তদন্তে উঠে এসেছে ট্রাম্প তার বিষয়ে নেতিবাচক কথা ধামাচাপা দিতে এই কাজ করেছে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরু থেকেই ম্যাকডুগালের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। হোয়াইট হাউসও সাবেক মডেলের দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সাবেক ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। তিনি বলেন, এসব নিয়ে ভাবতে চাই না। আমরা সুখেই আছি। ট্রাম্পের সাথে তার দাম্পত্যে কোনো ধরনের সমস্যা দেখছেন না সাবেক এই মডেল তারকা।