মিয়ানমারে অনির্দিষ্টকালের জন্য ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে জান্তা সরকার। এর মাধ্যমে দেশটির অভ্যন্তরীণ দমন-পীড়নের সংবাদ আন্তর্জাতিক মহলে প্রকাশে লাগাম টানার জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
এর আগে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার জন্য টেলিকম সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেয় পরিবহণ ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এরপর শুক্রবার (২ এপ্রিল) সকাল থেকেই ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত হয় মিয়ানমারের বেশির ভাগ নাগরিক। জান্তা বিরোধী বিক্ষোভ দমনে এর আগে মোবাইল ডাটায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল জান্তা সরকার।
অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমেছে লক্ষাধিক মানুষ। এর মধ্যেই ইন্টারনেট সীমিতকরণের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রণ আনতে চাচ্ছে সেনা সরকার।
অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৪৩ জনের।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই জান্তা সরকারের কারণে নিখোঁজ রয়েছেন শত শত রাজনীতিক, নির্বাচন কর্মকর্তা, সাংবাদিক, কর্মী ও আন্দোলনকারী।
এএপিপি বলছে, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, ট্রেড ইউনিয়নকর্মী, লেখক, ছাত্র, বেসামরিক নাগরিক, বিক্ষোভকারী, শিশুসহ অন্তত দুই হাজার ৭৫১ জনকে আটক করা হয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশটির সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর থেকে দেশটিতে জান্তাবিরোধী তুমুল বিক্ষোভ চলছে। সেনা অভ্যুত্থানের অবসান ও দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চিসহ সামরিক বাহিনীর হাতে আটক রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে রাজপথে রয়েছে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি সাধারণ জনগণ।