টাকা চুরি: মাকে বেঁধে রেখে ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ১৪, ২০২৪, ১২:৪৪ পিএম

টাকা চুরি: মাকে বেঁধে রেখে ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা

ছবি: সংগৃহীত

টাকা চুরির অভিযোগ তুলে মা বিবি খাতিজাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে ছেলে নূর মোহাম্মদকে (১৮) হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যাংক কর্মকর্তার পরিবারের বিরুদ্ধে। ফেনীর ছাগলনাইয়ার বাথানিয়া গ্রামে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় লাশ উদ্ধারের পর অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনকে আটক করেছে পুলিশ। ছাগলনাইয়ার বাথানিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে তিনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মারধরের বিষয়টি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা।

নুর মোহাম্মদের বাবা নোয়াখালীর সুধারাম থানার আন্দার চর গ্রামের নুর ইসলাম।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে। তিনি মারধরের কথা স্বীকার করেছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।’

ময়নাতদন্ত ছাড়া নূর মোহাম্মদের মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘শনিবার রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। টাকা চুরিকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই ব্যক্তির পিঠ, কোমর, হাত-পাসহ পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আঘাতেই তার মৃত্যু হয়েছে। এরপরেও ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না।’

বিবি খতিজার অভিযোগ, বাড়ি ঢোকা মাত্রই ব্যাংক কর্মকর্তার চারভাই মিলে তার ছেলেকে মারধর শুরু করেন। বাধা দিলে তাকেও মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন তারা। সারা রাত দফায় দফায় তার ছেলেকে মারধর করা হয়। এছাড়া পরদিনও তার ছেলেকে মারধর করা হয়। এরপর শনিবার বিকেলে বেদম মারধরে তার ছেলে নুর মোহাম্মদের মৃত্যু হয়।

ছেলেকে হত্যার ঘটনা বর্ণনা দিয়ে নিহত নুর মোহাম্মদের মা বিবি খতিজা বলেন, ‘অভাবের কারণে ৪ বছর আগে নুর মোহাম্মদকে ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনের বাড়িতে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিয়ে আসি। আমার ছেলের মাসিক বেতন ধরা হয়েছিল ২ হাজার টাকা। ৪ বছরে তাকে কখনও ছুটি দিত না ওই পরিবার। সেই ক্ষোভ থেকে গেল ২৭ রোজায় বাসা থেকে ৮০ হাজার টাকা ভর্তি একটি খাম নিয়ে নোয়াখালীতে নিজ বাড়ি চলে যায় আমার ছেলে। বাড়ি যাওয়ার পর থেকে ফোনে হুমকি দিতে থাকেন ব্যাংক কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের অব্যাহত হুমকিতে ঈদের পরদিন ছেলেকে নিয়ে তিনি ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে হাজির হন এবং চুরি করে নেওয়া টাকা ফেরত দেন।’

ছেলেকে হারিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিবি খতিজা বলেন, ‘আমার ছেলের যদি কোনো অন্যায় থাকতো, তাহলে তাকে পুলিশে দিতো। আমি তাদের কাছে আমার ছেলের জীবন ভিক্ষা চেয়েছি। তবু তাদের মন গলেনি। এভাবে নির্যাতন করে, সারারাত ধরে পেটাতে পেটাতে আমার ছেলেকে মেরে ফেলল। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’

Link copied!