মুখের ঘা প্রচণ্ড যন্ত্রণাদায়ক। সাধারণত মুখের ভেতরের ত্বকের আস্তরণে ক্ষত সৃষ্টির মাধ্যমে মাউথ আলসার বা মুখের ঘা শুরু হয়। শীতকালে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ বেড়ে যায়। আবার মুখে হঠাৎ কামড় লাগা, টুথব্রাশের আঘাত, শক্ত খাবার খাওয়ার সময় ঘর্ষণ, ভিটামিনের অভাব, দাঁত খোঁচানো, ঘুমের অভাব ও মানসিক চাপের কারণে মাউথ আলসার হয়। আলসারের আকার বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে। তবে সাধারণ ক্ষত তৈরি হলে কয়েকটি ঘরোয়া পদ্ধতির মাধ্যমে তা দূর হয়ে যায় সহজেই।
দেখে নিন ঘরোয়া প্রতিকার সম্পর্কে:
মধু
ঘরে বসেই মুখের আলসার সারাতে মধু ব্যবহার করতে পারেন। এর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য মুখের আর্দ্রতা বজায় রাখে ও শুষ্কতা দূর করে। মধুর সঙ্গে এক চিমটি হলুদ মিশিয়েও মুখের ঘায়ের ব্যবহার করতে পারেন।
অ্যালোভেরা
মুখের আলসার দূর করতে অ্যালোভেরা জেল খুবই কার্যকরী। মুখের ভেতরের যন্ত্রণা ও ব্যথা মুহূর্তেই সারিয়ে তোলে এই ভেষজ উপাদানটি। মুখের ঘা সারিয়ে তুলতে দিনে দুবার অ্যলোভেরার রস ব্যবহার করুন।
নারকেল দুধ
এক টেবিল চামচ নারকেল দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণ দিনে তিন থেকে চারবার ঘায়ের জায়গায় লাগান। মধু ছাড়া শুধু নারকেলের দুধ দিয়েও ক্ষত স্থানে মালিশ করতে পারেন। ক্ষত দ্রুত সেরে যাবে।
তুলসি পাতা
ওষুধি গুণে ভরপুর তুলসি মুখের ঘা সারাতেও কার্যকরী অবদান রাখে। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য মুখকে জীবাণুমুক্ত করে। মুখের ঘা সারাতে তুলসি পাতা চিবিয়ে খান কিংবা দিনে দুবার তুলসি ফোটানো গরম পানি দিয়ে কুল্কুচি করুন।
টি ব্যাগ
দ্রুত ব্যথা এবং জ্বালা দূর করতে টি ব্যাগ খুবই কার্যকর। একটি টি ব্যাগ ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে সেটি ঘায়ের জায়গায় লাগান। ব্যথা এবং ক্ষত দ্রুত সেরে যাবে।
লবণ পানি
মুখের ঘা সারাতে লবণ পানি কার্যকর। এই পানি দিয়ে কুল্কুচি করলে মুখের ব্যাকটেরিয়া দূর হয়। লবণ পানি মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া কমায়। ভালো ফলাফলের জন্য দিনে দুবার কুল্কুচি করুন।
রসুন
প্রাকৃতিক অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান আছে রসুনে। মুখের আলসারের ব্যথা ও ক্ষত দূর করতে রসুন ব্যবহার করতে পারেন। এতে অ্যালিসিন নামক উপাদান আছে। যা ঘায়ের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ভালো ফলাফলের জন্য দিনে দুবার আক্রান্ত স্থানে এক কোয়া রসুন ঘষুন।
কমলার রস
ভিটামিন সি এর অভাবে মুখে আলসার হয়। এ কারণে বেশি করে কমলার রস পান করুন। এ ছাড়াও যেসব খাবোরে ভিটামিন সি আছে সেগুলো বেশি করে খাওয়া জরুরি।
আরও পড়ুনঃ মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ে যেসব কারণে
হলুদ
হলুদ গুঁড়ো নিয়ে তাতে সামান্য মধু মিশিয়ে সেই মিশ্রণ মুখের ভেতরে হওয়া ঘা-এ লাগান।
টমেটো
খাবারের সঙ্গে পাতে কাঁচা টমাটো খাওয়ার অভ্যাস করুন। কয়েক দিন খেলেই মুখের ভেতরের ঘা সেরে যাবে।
ধনেপাতা
ধনেপাতা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে কুলকুচি করুন। দিনে কয়েকবার করে করলে আরাম পাবেন।
টুথপেস্ট
টুথপেস্টে থাকে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য। যা কালশিটে সংক্রমণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। মুখের ক্ষত স্থানে টুথপেস্ট লাগালে ব্যথা কমে ও জ্বালা-পোড়া সেরে যায়।
পানি দিয়ে কুল্কুচি
প্রথমে গরম পানি গার্গল করে সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডা পানিতে গার্গল করতে পারেন। এই টোটকা কাজে দেবে। কয়েকবার পাল্টে পাল্টে করলে উপকার পাবেন।