ফুলের ঋতু বসন্তে যে শহরে বসে সাপের মেলা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ২০, ২০২৩, ০২:৪৬ এএম

ফুলের ঋতু বসন্তে যে শহরে বসে সাপের মেলা

সংগৃহীত ছবি

নির্জীব শীতের শেষে বসন্ত আসে ফুলের সমারোহ নিয়ে। প্রকৃতি সাজে নতুন রূপে। আমাদের দেশে যেমন ঋতুর রাজা বসন্ত তেমনি দেশে দেশে বসন্তকালে দেখা যায় নতুন সব ফুলের মেলা। তবে ফুলের মেলার এই সময়টায় একটি অঞ্চলে দেখা যায় সাপের মেলা।

কানাডার মানিটোবা প্রদেশ। এই প্রদেশের একটি শহরে প্রতি বসন্তে নিয়ম করে পাতালের আশ্রয় থেকে বের হয়ে আসে ৭০ হাজারের বেশি সাপ। পৃথিবীর আর কোথাও এমনভাবে সাপে গিজগিজ করার দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় না। সাপপ্রেমী হাজারো মানুষ বসন্তে সেখানে হাজির হন এই সরীসৃপদের দেখতে। আপনার যদি সর্পভীতি থেকে থাকে তবে বসন্তকালে মানিটোবার ছায়া না মাড়ানোই ভালো।

মানিটোবার নারসিসের থেকে ছয় কিলোমিটার উত্তরে আর্মস্ট্রং এলাকায় দেখা যায় নারসিসে স্নেক ডেনস। প্রতি বসন্তে কয়েক দিন ধরে সেখানকার পাতালের বিভিন্ন ফাটল ও গর্ত থেকে বের হয়ে আসতে থাকে রেড সাইডেড গারটার স্নেক নামে পরিচিত সাপগুলো। উদ্দেশ্য, মিলিত হয়ে সন্তান উৎপাদন।

মানিটোবা জায়গাটি কানাডার মতো দেশের বিবেচনায়ও অত্যাধিক শীতল আর ওই স্থানে পানির প্রবাহের কারণে চুনাপাথরের ওপরে পাতলা মাটির আস্তরের নিচে অসংখ্য গুহার সৃষ্টি হয়েছে। সেসব গুহায় বাসা বানিয়েছে হাজারো সাপ।

প্রতি বসন্তে দশ দিন ধরে এই সাপের মেলা বসে। তবে একেবারে নির্দিষ্ট সময়টা আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল। এ সময়টিতে অনেক বিজ্ঞানীরা গবেষণার প্রয়োজনে যান জায়গাটিতে। তবে তাঁরা সাধারণত কাজ করেন বিভিন্ন ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে থাকা সাপের গর্তগুলোয়। গবেষক ও দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে সেখানে মানিটোবা ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস পার্ক তৈরি করা হয়েছে। এই পার্কে আনুমানিক ৭০ হাজার প্রজাতির সাপের শীতকালীন আবাস। তাঁরা একে সাপের গর্ত না বলে ‘স্নেক ডেন’ বা ‘সাপের গুহা’ বলতে পছন্দ করেন।

তবে ৭০ হাজার সাপ একসাথে আছে এটা ভাবতে ভয়ংকর মনে হলেও এরা মোটেও ক্ষতিকর নয়। অর্থাৎ এই সাপ বিষধর নয়।

প্রথম দেখায় পার্কটিকেও অন্য সাধারণ পার্কগুলোর মতোই মনে হবে। বসার জায়গা, বনের ভেতর নুড়ি বিছানো পথ, তৃণভূমি নজর কাড়বে আপনার। তবে এখানকার মূল আকর্ষণ চারটি বড় গর্ত। আপাতদৃষ্টিতে এগুলোকে ঝোপ-জঙ্গলে ঢাকা মনে হলেও কাছে যেতেই বুঝতে পারবেন এগুলোর মেঝেতে গিজগিজ করছে, একটার গায়ের ওপর আরেকটা পিছলে যেতে থাকা অসংখ্য সাপ।

বছরে অন্তত একবার সাপগুলোর জন্য পর্যটকের সমাগম হয় এই পার্কে। পার্কটিতে একে-অপরকে জড়িয়ে থাকা সারা এবং স্যাম নামে দুটি বিশাল আকারের সাপের মূর্তিও রয়েছে। 

পর্যটকদের পাশাপাশি বাসভর্তি স্কুলের শিক্ষার্থীরাও আসেন এই সাপের মেলা দেখতে। কাজেই সর্পভীতি না থাকলে কানাডার পরবর্তী বসন্তে হাজির হয়ে যেতে পারেন নারসিসের সর্পরাজ্যে।

Link copied!