বিয়ের দিন অন্য মেয়েকে নিয়ে ভেগেছে বর, ক্ষতিপূরণ পেয়ে বিরল ঘটনা ঘটালেন কনের বাবা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩, ১২:৫৮ এএম

বিয়ের দিন অন্য মেয়েকে নিয়ে ভেগেছে বর, ক্ষতিপূরণ পেয়ে বিরল ঘটনা ঘটালেন কনের বাবা

গরু-ছাগল জবাই করে বরপক্ষকে আপ্যায়ন করাসহ বিয়ের সব আয়োজন শেষে বর ও বরপক্ষের লোকজনের জন্য অপেক্ষা করছিল কনেপক্ষ। তবে দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ার পরও বরপক্ষ না আসায় বিয়েবাড়িতে আনন্দের বদলে শোকের ছায়া নেমে আসে। পরে কনেপক্ষের লোকজন জানতে পারেন, গ্রামের অন্য একটি মেয়েকে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন বর।

এ ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বরের পরিবারকে জরিমানা করেন। পরে সেই জরিমানার টাকা কনের বাবার হাতে তুলে দেন স্থানীয় পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম জাকারিয়া আলম। তবে কনের বাবা সেই টাকা গ্রহণ না করে গ্রামের অসহায় বা দুস্থ পরিবারের কোনো বিবাহ উপযুক্ত মেয়ের বিয়েতে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এজন্য টাকাগুলো চেয়ারম্যানের কাছে আমানত হিসেবে রেখে দিয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নে এ বিরল ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ক্ষতিপূরণ হিসেবে দুই লাখ টাকা কনের বাবার হাতে তুলে দেয় বরের পরিবার। এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি বিয়ের দিন ধার্য থাকলেও বর না আসায় ওই বিয়ে আর  হয়নি।

অভিযুক্ত বরের নাম হুসাইন। তিনি একই উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী ওমর ফারুকের ছেলে।

কনের পরিবার সূত্রে জানা যায়, দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়।  দেনমোহর ধার্য হয় ৭৫ হাজার টাকা। এর দুদিন আগে ছেলে ও তার পরিবারের সদস্যরা মেয়ের নাকে নাকফুল পরিয়ে দিয়ে আসেন।

এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০-২৫ জন সহযাত্রীসহ বিয়ে করতে আসার কথা ছিল বরের। তবে ওইদিন বিয়ের সব আয়োজন শেষে কনেপক্ষ  জানতে পারে, গ্রামের অন্য একটি মেয়েকে নিয়ে বর হুসাইন অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন।

পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম জাকারিয়া আলম গণমাধ্যমকে আলম,ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তবে মেয়ের বাবা ক্ষতিপূরণের টাকা আমানত হিসেবে রেখেছেন। কোনো গরিব পরিবারের মেয়ের বিয়ের জন্য তিনি টাকাটা খরচ করতে চান। এর মাধ্যমে কনের বাবা বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।“

 

নিজের নাম-ঠিকানা গোপন রাখার শর্তে কনের বাবা গণমাধ্যমকে বলেন, “আমার মেয়েকে বিয়ে না করায় আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি। আমার মেয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। এতে আমার তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মর্যাদাহানির হিসাব করলে ক্ষতির পরিমাণ অনেক। ওই টাকা দিয়ে আমার ক্ষতি পোষাবে না। তাই আমি ওই টাকা আমার জন্য খরচ করতে চাই না।”

Link copied!