ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা সোহেল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী। ব্যবসায়ী ও চিত্র প্রয়োজক আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে মিলে বোতল চৌধুরী ও ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ওই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
র্যাব ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আশিষ রায় কিভাবে বোতল চৌধুরী হয়ে উঠলেন তার পেছনে থাকা রহস্য। আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী। কিশোর বেলা থেকেই মদ ছিল তার প্রিয় পানীয়। প্রতিদিনিই মদ খেয়ে মাতাল হয়ে থাকতেন। মদ খেয়ে মদের বোতল হাতে নিয়েই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতেন বাসায়। এসব দৃশ্য স্থানীয় ও আশীষের বন্ধুরা দেখার পর তার নামের পাশে রাখা হয় বোতল। এরপর থেকেই আশীষ রায় চৌধুরী নামের পাশে প্রচলন হয়ে উঠে বোতল চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাতে গুলশানের একটি বাসা থেকে আশীষ রায় চৌধুরীকে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ আটক করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে দুই তরুণীও ছিলেন। অভিযানের সময় ওই বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মদের বোতল উদ্ধার করা হয়।
আশীষ রায়কে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে র্যাব গণমাধ্যমে বলেন, ছোট বেলায় যখন দুধ পান করতেন। তখন ফিডার বলতে ছিল কাচের বোতল। সেই কাচের বোতল বারবার ভেঙে ফেলতেন আশিষ। এক পর্যায়ে দাদী ও নানী বোতলে দুধ ভরে আশীষ রায়ের গলায় ঝুলিয়ে রাখতেন। তখন থেকে আত্মীয় স্বজনরা বোতল বলেই ডাকতেন। অবশ্য পরিচত জনেরা জানান, স্কুল জীবন থেকেই মদপান শুরু করেন আশীষ চৌধুরী।
র্যাব জানায়, আশীষ রায়ের বাসায় বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মদের প্রচুর বোতল পাওয়া গেছে। দামি-দামি এসব মদের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে আশীষ বাসায় মিনি বার গড়ে তুলেছেন। তার এই মিনি বার থেকে প্রায় ১৯-২০টি দেশি-বিদেশি নানা ব্র্যান্ডের মদের বোতল জব্দ করা হয়েছে। নিজের মিনি বারে বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে নিয়মিত মদের আসর বসাতেন আশীষ। তার কাছে এই বিপুল পরিমান মদের বোতল ও সবসময় পান করায় তার নাম হয় বোতল চৌধুরী।
গ্রেফতার আশিষ রায় জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে বলেন, তিনি ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত একটি এয়ারলাইন্সের ডিরেক্টর (অপারেশন্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত তিনি আরেকটি এয়ারলাইন্সের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। ২০১৩ থেকে এখন পর্যন্ত তিনি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত।