দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

কারও সাথে আপস করে ক্ষমতায় যাওয়ার কথা চিন্তা করি না: প্রধানমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩, ০১:১৪ এএম

কারও সাথে আপস করে ক্ষমতায় যাওয়ার কথা চিন্তা করি না: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সিআরআই

গত ২২ ডিসেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’ অনুষ্ঠানে তরুণদের মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) উদ্যোগে ‘লেটস টক’ অনুষ্ঠানের ৫২তম আসরটি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়। এই অনুষ্ঠানের ভিডিওটি বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সিআরআই ও ইয়াং বাংলার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে সম্প্রচার করা হয়।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তরুণ সংগঠক এবং নিজের কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন এমন তরুণদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তর-আলোচনার পাশাপাশি তরুণদের পরামর্শ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

চেইঞ্জমেকার, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি হিসেবে এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার ইনফ্লুয়েন্সারও উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠানে। 

অনুষ্ঠানে দেশের মানবাধিকার ইস্যু বা অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ প্রকাশ এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে তাদের নিশ্চুপ থাকা ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের শামিল’ কি না এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ তো একমাত্র গ্যাস। আমি যখন ৯৬ সালে সরকারে আসি তখন ইন্টারন্যাশনাল টেন্ডার দিয়ে অনেক কোম্পানি আসে। আমেরিকান কোম্পানিও এখানে তখন গ্যাস উত্তোলন করে। তখন একটা প্রস্তাব আসল যে এই গ্যাস বিক্রি করে দিতে হবে। আমি এতে আপত্তি করলাম। সেই আপত্তি করার খেসারত আমাকে দিতে হয়েছে। ২০০১ এর নির্বাচনে আমাকে আসতে দেওয়া হয়নি। আমার দেশের ভেতর আর বাইরের চক্রান্ত এক হয়ে গেল। তো এরকম কিছু ব্যাপার আছে। এরা সবসময় হস্তক্ষেপ করতে চায়।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজকে মানবাধিকার কথা নিয়ে তারা প্রশ্ন তোলে। শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা তোলে। দুর্ভাগ্যের বিষয়টি হলো নিজের দেশের দিকে তাকায় না, জাতিসংঘে আমি ফিলিস্তিনি ইস্যুটা তুলেছিলাম। ইইউতেও আমি যখন গেলাম তখন খুব শক্তভাবে এই প্রশ্নটা তুলেছিলাম ফিলিস্তিনি শিশু ও নারীদের মারা হচ্ছে এখন কেন সবাই চুপ। এমনকি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের দুই দুই বার যুদ্ধ বন্ধের জন্য যে প্রস্তাব আসলো তাতে আমেরিকা ভেটো দিল।’

আমেরিকায় মানুষের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা অন্য জায়গায় এসে খবরদারি করে। এই মোড়লিপানা যে তাদের কে করতে দিল আমি সেটা জানি না। আমি এই বিষয়টা সবার আগে আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরেছি এবং প্রতিবাদও করেছি। তারা আমাদের শ্রম অধিকার নিয়ে কথা বলে। তাদের ওখানে কর্মীরা একটা স্ট্রাইক করে সবগুলাকে চাকরি থেকে বের করে দেয়। এতে তাদের কিছু আসে যায় না কিন্তু অন্য দেশের বেলা নাক গলায়।

তিনি আরও বলেন, ইরানে শাহ পালভীর যখন পতন হয় তিনি একটা কথা বলেছিলেন, আমেরিকা যার বন্ধু হবে তার শত্রু লাগবে না। হাজার হাজার যুবক ইউক্রেনে জীবন দিয়েছে। রিফিউজি হয়েছে কত মানুষ। এখন যুক্তরাষ্ট্র বলছে তাদের টাকা নাই দিতে পারবে না করতে পারবে না সহায়তা। তাহলে যুদ্ধটা বাঁধাল কেন? এই উস্কানি তারা দিল কেন? রাশিয়ার এই আক্রমণ আমরা সমর্থন করিনি।

জাতিসংঘে আমরা খুব হিসেবে করে পা ফেলি। কারণ আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হলো সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারও সাথে বৈরিতা নয়। কিন্তু ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের এক স্ট্যান্ড আবার ওইদিকে ফিলিস্তিনি শিশুদের হাসপাতালে বোম ফেলা। সাধারণ মানুষকে বোমা ফেলে হত্যা করা বন্ধ না করে তারা ইসরায়েলকে উল্টো আরও অস্ত্র কেনার টাকা দিচ্ছে।  ইস্যুতে ইসরায়েলকে তারা উল্টো আরও টাকা দিচ্ছে অস্ত্র কেনার জন্য। এদের মানবাধিকারের ডেফিনেশন কী সেটাই আমরা বুঝলাম না । পৃথিবী মনে হয় এটা বুঝতে পারেনি। তবে সারা বিশ্ব এ ব্যাপারে সচেতন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে গ্যাস না দেওয়ার পর তারা ঝামেলা করেছিল। তবে জনগণ এখন সচেতন। তারপরেও কারও সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করে ক্ষমতায় যেতে হবে ওই চিন্তা আমি করি না। ওরা তো লেগেই আছে আমার বিরুদ্ধে সারাক্ষণ তাতে কিছু আসে যায় না। জনগণের শক্তি বড় শক্তি। তারা ইলেকশনের ব্যাপারে অনেক কথা বলে। যখন তাদের প্রশ্ন করা হয় এই যে বিএনপি ট্রেনে আগুন-মা শিশু পুড়িয়ে ফেলল। এ ব্যাপারে তাদের মুখ বন্ধ। এদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে এদের নিজেদেরই একসময় খেসারত দিতে হবে। এটা হল বাস্তবতা।

Link copied!