কবি মোহাম্মদ রফিক মারা গেছেন। রবিবার (৬ আগস্ট) তাঁর মৃত্যু হয়। কবির বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কবির ভাই মোহাম্মদ তারেক।
এর আগে নিজের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের চিতলীতে অবস্থানকালে রবিবার সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন কবি মোহাম্মদ রফিক। তাঁকে প্রথমে বাগেরহাট এবং পরে বরিশাল নেওয়া হয়। বরিশালের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে বিভিন্ন পরীক্ষার পর বেশি কিছু শারীরিক জটিলতা ধরা পড়লে চিকিৎসকেরা তাঁকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। রোববার সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা কবিকে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা রওনা হন। একপর্যায়ে পথেই মারা যান তিনি।
ষাটেরদশকে ছাত্র আন্দোলন ও কবিতায়, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে এবং স্বাধীন বাংলাদেশে আশির দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে কাব্যিক রসদ যুগিয়ে বিখ্যাত হয়ে আছেন কবি মোহাম্মদ রফিক। তাঁর জন্ম ১৯৪৩ সালে ২৩ অক্টোবর বাগেরহাট জেলার বেমরতা ইউনিয়নের চিতলী-বৈটপুর গ্রামে। একাধারে একজন কবি, লেখক ও শিক্ষক মোহাম্মদ রফিক আট ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলেসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
সেই সময়ের আলোচিত অনেক কবিতা ছিল। তারমধ্যে অন্যতম হল কবি মোহাম্মদ রফিকের ‘খোলা কবিতা’ নামের একটি কবিতা। যে কবিতাটি তখন গোপনে হটকেকের মতো বিক্রি হতো। কারণ কবিতাটি নিষিদ্ধ করিয়েছিলেন জেনারেল এরশাদ। কবিতাটি এতোই আলোচিত যে এর কয়েকটি লাইন এখনো প্রসঙ্গক্রমে নানাজন মুখস্ত বলে দেন ক্ষোভ প্রকাশে। কবিতাটির কয়েকটি পংক্তি এরকম: ‘সব শালা কবি হবে, পিঁপড়ে গোঁ ধরেছে উড়বেই, দাঁতাল শুয়োর এসে রাজাসনে বসবেই।’
মোহাম্মদ রফিক একুশে পদক ছাড়াও, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জেমকন সাহিত্য পুরস্কার সহ বিভিন্ন স্বীকৃতি ও পুরস্কার অর্জন করেছেন। প্রথম আলো বর্ষসেরা বই: ১৪২৩-এ সৃজনশীল শাখায় পুরস্কার পায় মোহাম্মদ রফিকের কবিতার বই ‘মানব পদাবলি’।
কবি মোহাম্মদ রফিকের প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে ‘কপিলা’, ‘খোলা কবিতা, ‘গাওদিয়া’, ‘মানব পদাবলী’, ‘আত্মরক্ষার প্রতিবেদন’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।