বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে আবারও বসেছেন অভিনেত্রী নিপুণ। শুধু তাই নয়, শিল্পী সমিতির টেবিলে নিপুণ তার নেমপ্লেটও লাগিয়েছেন। নেমপ্লেটে লেখা রয়েছে- নিপুণ আক্তার, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে চিত্রনায়ক জায়েদ খান ও চিত্রনায়িকা নিপুণের দ্বন্দ্ব 'টক অব দ্য' কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের পক্ষে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের শুনানি আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন পর্যন্ত জায়েদ-নিপুণ দু’জনের কেউই দায়িত্ব পালন করতে পারবে না বলেও আপিল বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়।
তবে অভিনেত্রী নিপুণ বৃহস্পতিবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চেয়ারে বসেছেন। শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে নিপুণকে বরণ করে নিয়েছে এফডিসির সবগুলো সংগঠন। এসব সংগঠনগুলোর প্রধানরা নিপুণকে ফুল দিয়ে বরণ করেন এবং তাকে মিষ্টিমুখ করান।
নিপুণকে বরণ করা প্রসঙ্গে এফডিসির সংগঠনগুলো গণমাধ্যমে জানায়, তারা নিপুণকেই সাধারণ সম্পাদক পদে গ্রহণ করেছেন। এ জন্য ফুল দিয়ে বরণ করেছেন এবং মিষ্টিমুখ করিয়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১টায় সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটি। ফুলেল শ্রদ্ধা শেষে সভাপতি উপস্থিত সবাইকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়া করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নতুন কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনূর, কোষাধ্যক্ষ আজাদ খান, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক ইমন, দপ্তর সম্পাদক আরমান, কার্যকরী সদস্য ফেরদৌস, জেসমিন। এ ছাড়াও ছিলেন রিয়াজ ও নিপুণ। তবে মিশা-জায়েদ প্যানেল থেকে নির্বাচিত সদস্যদের দেখা মেলেনি।
এর আগে, গতকাল আদালতের শুনানি শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন নিপুণ। তিনি কবে চেয়ারে বসছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নিপুণ বলেন, “এখন চেয়ারে বসতে আর কোনো বাধা নেই। কিন্তু আমি ফুল বেঞ্চের জন্য অপেক্ষা করতে চাই। শুধু একটা কথাই বলব- আপিল বোর্ড থেকে আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি, আদালত থেকেও ন্যায়বিচার পেয়েছি।”
প্রসঙ্গত, গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনের প্রাথমিক ফলে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ি ওইদিনই ফলাফল ঘোষণা করার কথা থাকলেও নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন ভোর ৫টার দিকে ওই ফলাফল ঘোষণা করেন।
তবে নিপুণ নির্বাচনে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ আনলে ৫ ফেব্রুয়ারি সেই পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বোর্ড জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে। পরে নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী ঘোষণা করেন।
আপিল বোর্ডের এ ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয়ে জায়েদ খান আদালতের দ্বারস্থ হলে আদালত আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আপিল বিভাগে আবেদন করেন নিপুণ। পরে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের পক্ষে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছে চেম্বার আদালত। আসছে ১৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির পর জানা যাবে কে হবেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক।