‘বিক্রিই যদি হতে হয়, তাহলে খেলার কী প্রয়োজন? পাকিস্তানের থেকে কত টাকা খেয়েছেন বলতে পারেন?’ সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই কুরুচিকর সব তির্যক মন্তব্য ভেসে এসেছে মহম্মদ সামির দিকে। তাঁর ‘অপরাধ’, রবিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচের ১৮তম ওভারে ভালো বল করতে পারেননি তিনি। তারই জেরে নেটিজেনদের একাংশের বিশ্রী আক্রমণের শিকার হয়েছেন ভারতীয় পেসারটি। ইনস্টাগ্রামে সামির ছবির নীচে অশ্রাব্য ভাষায় ক্যাপশন লেখা হয়েছে। যা নিয়ে শোরগোল তৈরি হয়েছে ক্রিকেট মহলে।
শচীন তেন্ডুলকর, বীরেন্দ্র সেওয়াগ, হরভজন সিং, ইরফান পাঠানের মতো প্রাক্তনরা এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। শচীন বলেন, ‘সামির খেলায় কোনও ফাঁকফোকর নেই। বিশ্বমানের বোলার। কিন্তু মাথায় রাখা দরকার, ক্রীড়াবিদের প্রতিটি দিন ভালো যায় না। সামি ও টিম ইন্ডিয়ার পাশেই রয়েছি আমি।’ বীরেন্দ্র সেওয়াগ পরিষ্কার বলেছেন, ‘ব্যর্থ হয়েছে তো পুরো ভারতীয় দল। তাহলে শুধুমাত্র সামিকে দোষারোপ কেন? সবচেয়ে বড় কথা, এই অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। ওকে এভাবে অনলাইন অ্যাটাক করার ঘটনায় আমি সত্যিই দুঃখিত। ও একজন চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার। প্রাক্তন হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, ভারতের টুপি পরে যারা খেলতে নামে তারা হৃদয় দিয়েই ক্রিকেটটা খেলে। সামিকে একটাই অনুরোধ, আগলা ম্যাচ মে দিখাদো জলওয়া (পরের ম্যাচে আগুন ঝরিয়ে দাও)।’ ইরফান পাঠানের কথায়, ‘সামিকে ঘৃণ্য আক্রমণের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।’ আর এক প্রাক্তন তারকা হরভজন সিং ট্যুইট করেছেন, ‘সামি, আমরা তোমায় ভালোবাসি।’ বিশ্বকাপে সুযোগ না পাওয়া রিস্ট স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল ট্যুইটারে লিখেছেন, ‘আমরা তোমার জন্য গর্বিত সামি ভাইয়া।’ ভারতীয় ক্রিকেট মহল বিস্মিত নেট নাগরিকরা সামিকে ভিলেন বানানোয়। অনেকেই বলছেন, ‘২০১৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তান ব্যাটিংকে দুমড়ে দিয়েছিলেন সামি। ভারতীয় দলের হয়ে এই জোরে বোলারের অতীত পারফরম্যান্স এত দ্রুত ভুলে গেল ক্রিকেটপ্রেমীরা!’
সরব হয়েছেন ভারতের আরেক প্রাক্তন ওপেনার গৌতম গম্ভীর। তাঁর সাফ কথা, ‘ভারতের হারে আমাদের দেশেই প্রচুর বাজি-পটকা ফেটেছে। আর যারা এটা করেছে তারা কখনওই ভারতীয় নন।’রবিবার পাক ব্যাটিংয়ের প্রথমদিকে সামি খুব একটা ভালো বোলিং করতে পারেননি। ১৮তম ওভারেও তাঁর হাতেই বল তুলে দিয়েছিলেন কোহলি। তখন পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। প্রথম বলই গ্যালারিতে আছড়ে পড়ে। পরের দু’টি বলে বাউন্ডারি। সেই ওভারের এক বল বাকি থাকতেই ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেন বাবররা। সামির বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড়ায় ৩.৫-০-৪৩-০। তারপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ান নির্ভরযোগ্য পেসারটি।