‘৫১০ কোটি টাকার’ খবর নিয়ে তোলপাড়, জবাব দিলেন মাশরাফি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ১, ২০২২, ১২:৩৪ এএম

‘৫১০ কোটি টাকার’ খবর নিয়ে তোলপাড়,  জবাব দিলেন মাশরাফি

ভারতীয় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকট্র্যাকার নামে একটি সাইটে দাবি করা হয়েছে ৫১০ কোটি টাকা সম্পত্তির মালিক ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা। ওই সাইটের দাবি, সাকিব আল হাসানের টাকার পরিমাণ ৪০৭ কোটি। ওই খবর প্রকাশের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। আজ তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোষ্ট দেওয়া হয়েছে। সেখানে তিনি লিখেছেন তাঁর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।

মাশরাফি লিখেছেন, ’’ভিনদেশী কোনো হাবিজাবি স্বস্তা ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজ তাদের মনগড়া যা ইচ্ছা লিখতেই পারে। সেসবকে পাত্তা দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু তাদেরকে সূত্র ধরে নিয়ে যখন আমাদের দেশের নানা ওয়েবসাইট যা ইচ্ছা তাই লিখে দেয়, তখন দুঃখ লাগে বটে !

দেশের একজন মানুষকে নিয়ে লেখা হচ্ছে, আপনারা চাইলেই তো খোঁজ-খবর নিতে পারেন। তা না করে উল্টো তাদের উদ্ভট নিউজের সূত্র ধরে আপনারা নিউজ করছেন। সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার ন্যূনতম চর্চা নাহয় করলেন না, অন্তত নিজেদের এতটা স্বস্তা হিসেবে তুলে ধরতেও তো বিবেকে নাড়া দেওয়া উচিত...!’’

এদিকে ভারতীয় ওই সাইটের খবর সম্পর্কে সারাদিন দেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় ছিল। অনেকে বলছেন, ওই খবরের বিশ্বাসযোগ্য কোনো সূত্র নেই। কারণ যে ওয়েবসাইটের বরাতে খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে (ক্রিকট্র্যাকার) সেটির প্রতিবেদনের তথ্যের নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রের উল্লেখও নেই। তাতে সূত্র সম্পর্কে লেখা হয়েছে ’According to multiple websites.’ অর্থাৎ, এটি একটি নাম পরিচয়হীন সূত্র। সম্পদের এই পরিমাণ কী পদ্ধতিতে বের করা হয়েছে তারও সুস্পষ্ট কোনো বর্ণনা নেই। ফলে সহজেই বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে এ প্রতিবেদন।

ক্রিকট্র্যাকারের এই তালিকায় সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকের সম্পত্তির মোট পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩০ কোটি টাকারও বেশি। পেসার রুবেল হোসেনের সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার। আর ৫ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৬ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তির মালিক তাসকিন।

পাশাপাশি, ৭ মিলিয়ন ডলারের মালিক মাহমুদউল্লাহ, কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের মোট সম্পত্তি ১৩ মিলিয়ন ডলার বা ১৩১ কোটিরও বেশি। আর লিটন কুমার দাসের সম্পত্তি ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১৫২ কোটি টাকা। এছাড়া, তামিম ইকবালের সম্পদের পরিমাণ ২০ মিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০০ কোটি টাকারও বেশি, মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিমের মোট সম্পত্তির বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৫৫ কোটি টাকা বলেও জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

যে ওয়েবসাইটের বরাতে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে সেটি একটি ক্লিকবেইট ওয়েবসাইট এবং যা ডিসক্লেইমার আকারে ওয়েবসাইটের নিচেই বলা আছে। তারা তাদের প্রতিবেদনে দেয়া তথ্যের সত্য/মিথ্যার দায় নেয় না। তদের ডিসক্লেইমারে লেখা হয়েছে: ’Any reliance you place on such information is therefore strictly at your own risk.’ ফলে, এ প্রতিবেদন যে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তা সহজেই বুঝা যায়। 

অনেকে বলছেন, কোনো পেশাদার বা ক্রিকেটবোদ্ধা সাংবাদিক বা বিজনেস সাংবাদিক এই প্রতিবেদনের লেখক নন। যে লিখেছে সে একজন বালক এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ফ্রিলান্স আর্টিকেল রয়েছে তাঁর। বিভিন্ন ফ্রিলান্সিং সাইটে প্রোফাইল আছে ফ্রিলান্সার ওই বালকের। ফলে সংবাদ নামের ওই তথ্যসমূহ যে ফান করার উদ্দেশ্যেই, সেটি পরিষ্কার।

Link copied!