অস্ট্রেলিয়ার নাটকীয় জয়

স্পোর্টস ডেস্ক

অক্টোবর ২৮, ২০২৩, ০৭:০৯ পিএম

অস্ট্রেলিয়ার নাটকীয় জয়

তাসমান সাগরের দুপাশের অধিবাসী তারা। বন্ধুত্ব তাদের মনে সব সময় রয়েছে। ক্রিকেট দুনিয়ায় অবশ্য তাদের অন্য পরিচয় আছে। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে আবারও তারা প্রমাণ করেছে। ধর্মশালায় ৫ রানে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। 

অস্ট্রেলিয়া ৩৮৮ রান তুলেছিল। জবাবে ৯ উইকেটে ৩৮৩ রানে থেমে যায় নিউজিল্যান্ড। অবিশ্বাস্য লড়াই দেখেছে বিশ্ব। 

ওপেনার ট্রাভিস হেডের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৪৯ দশমিক ২ ওভারে ৩৮৮ রানে অলআউট হয়েছে অস্ট্রেলিয়া।  ৬৭ বলে ১০৯ রান করেন হেড।
ধর্মশালাতে টস জিতে প্রথমে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় নিউজিল্যান্ড। ডেভিড ওয়ার্নারকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে দারুন সূচনা এনে দেন ইনজুরি থেকে সুস্থ হয়ে প্রথমবারের মত এই বিশ^কাপে খেলতে নেমে ট্রাভিস হেড। দু’জনের ঝড়ো হাফ-সেঞ্চুরিতে ১০ ওভারে বিনা উইকেটে ১১৮ রান পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। যা ওয়ানডে ক্রিকেটে  প্রথম ১০ ওভারে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান।
২৮ বলে ওয়ানডেতে ৩২তম ও বিশ্বকাপে টানা তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংস খেলেন ওয়ার্নার। ২৫ বলে ওয়ানডেতে ১৬তম ও এবারের বিশ্বকাপে দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরির নজির গড়েন হেড। ১৫তম ওভারে দেড়শ রান স্পর্শ করে অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডেতে উদ্বোধনী জুটিতে দ্রুত দেড়শ রান স্পর্শে  এটিই এখন সেরা। ওভারপ্রতি ৯ দশমিক ১৩ রান তুলেছেন তারা। ১৭তম ওভারে স্পিনার রাচিন রবীন্দ্রর বলে ৭৫ রানে থাকা হেডের ক্যাচ ফেলেন গ্লেন ফিলিপস।
২০তম ওভারের প্রথম বলে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন স্পিনার গ্লেন ফিলিপস। ৫টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৬৫ বলে ৮১ রান করে বিদায় নেন ওয়ার্নার। হেডের সাথে ১১৭ বলে ১৭৫ রান যোগ করেন ওয়ার্নার। বিশ^কাপে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে যা চতুর্থ সর্বোচ্চ রান।  ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে এটি দ্বিতীয় সেরা।

রাচিন রবিন্দ্র ১১৬ রান করেছেন। ড্যারেল মিচেল ৫৪ রানে সাজঘরে ফেরেন। জিমি নিশামের হাতে ম্যাচ ছিল। ৫৮ রানে তিনি আউট হলে আর নিউজিল্যান্ড ট্র্যাকে ফিরতে পারেননি। 

এর আগে ওয়ার্নার ফেরার পর ২২তম ওভারে ওয়ানডেতে চতুর্থ সেঞ্চুরি করেন ৫৯ বল খেলা হেড। অসিদের পক্ষে ওয়ানডেতে চতুর্থ দ্রুততম সেঞ্চুরি এটি। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে বিশ^কাপ অভিষেকে সেঞ্চুরি করা পঞ্চম ব্যাটার হলেন হেড। সেঞ্চুরি পূর্ন করার  এক ওভার পর ফিলিপসের দ্বিতীয় শিকার হন ১০টি চার ও ৭টি ছক্কায় ৬৭ বলে ১০৯ রান করা হেড।
দলীয় ২শ রানে হেড ফেরার পর ছোট-ছোট ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। হেড ফেরায় ওপেনিং থেকে তিন নম্বরে নেমে ৫১ বলে ৩৬ রান করেন মিচেল মার্শ। ১৮ রান করে থামেন স্টিভেন স্মিথ ও মার্নাস লাবুশেন। এতে ৩৯তম ওভারে ২৭৪ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।
এরপর ষষ্ঠ উইকেটে আগের ম্যাচে ঝড়ো সেঞ্চুরি করা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সাথে ৩৮ বলে ৫১ এবং সপ্তম উইকেটে অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের সাথে ২২ বলে ৬২ রান যোগ করেন  উইকেটরক্ষক জশ ইংলিশ। পেসার জেমস নিশামের করা ৪৮তম ওভারে দু’জনে দু’বার জীবন পেয়ে ৪টি ছক্কায় ২৭ রান তুলেন কামিন্স ও ইংলিশ।
৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৪ বলে ৪১ রান করেন ম্যাক্সওয়েল। ইংলিশ ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৮ বলে করেন ৩৮ রান। কামিন্সের ১৪ বলে ৩৭ রানের ক্যামিও ইনিংসে ২টি চার ও ৪টি ছক্কা ছিলো। এতে ৪ বল বাকী থাকতে সব উইকেট হারিয়ে ৩৮৮ রানের পাহাড় গড়ে অস্ট্রেলিয়া। বিশ^কাপে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় রান অসিদের। শেষ ১০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া।
পুরো ইনিংসে ২০টি ছক্কা মারেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা। বিশ^কাপে এক ইনিংসে এটিই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছক্কা। তবে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে এটিই অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড। 
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ১০ ওভার করে বল করে ফিলিপস ৩৭ ও বোল্ট ৭৭ রানে ৩টি করে উইকেট নেন।

Link copied!