জিপিএস যুগে বাংলাদেশ ক্রিকেট

মুবিন আহমেদ

আগস্ট ১৯, ২০২৩, ০৬:৫৭ পিএম

জিপিএস যুগে বাংলাদেশ ক্রিকেট

সংগৃহীত ছবি

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে ক্রিকেটে। ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) যেমন আম্পায়ারদের সাহায্য করার পাশাপাশি তাদের দেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের সংশয় দূর করছে, তেমনি ক্রিকেটারদের ফিটনেস উন্নয়নে ব্যবহৃত হচ্ছে নানা প্রযুক্তি। এর মধ্যে অন্যতম গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) প্রযুক্তি। কিছুটা দেরিতে হলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলও এখন খেলোয়াড়দের শরীরে ব্যবহার করছে উন্নত এই প্রযুক্তি। ফলে একজন খেলোয়াড়ের ফিটনেসের পুরো তথ্য পাচ্ছেন ট্রেনার, ফিজিওরা।

ক্রিকেট অপারেশন্স কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সিস্টেমে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্য ভিন্ন ‘অ্যাকাউন্ট’ থাকবে। একজন খেলোয়াড় ম্যাচ খেলার জন্য ফিট কিনা, সেটি তার নামের পাশে সবুজ-হলুদ বা লাল চিহ্ন দ্বারা বুঝা যাবে। সবুজ মানে ফিট, লাল মানে ফিট নয় এবং হলুদ মানে তার ফিটনেস নিয়ে সন্দেহ আছে।

ক্যাটাপল্ট জিপিএস সিস্টেম প্রযুক্তির বিস্তারিত সুবিধা ব্যাখ্যা করেছেন বাংলাদেশ দলের ট্রেনার নিক লি। এক ভিডিও বার্তায় এই ট্রেনার জানান, চলতি মাসের শুরুতে এশিয়া কাপের ফিটনেস ট্রেনিংয়ের সময়ই ক্রিকেটারদের শরীরে আটকে দেওয়া হয় একটি ডিভাইস। এই ডিভাইস একজন খেলোয়াড়ের শারীরিক গতি, প্রকৃতির সমস্ত তথ্য সরবরাহ করে সফটওয়্যারে।

বাংলাদেশ দলের এই ট্রেনার আরও বলেন, ‘আগেও লম্বা সময় ধরেই রানিং করত সবাই, কিন্তু তথ্যের দিক থেকে আমরা কিছু পেতাম না। এখন খেলোয়াড়রা কী করছে, কতটা দূরত্ব দৌড়াচ্ছে, কতটা গতিতে, কতটা তীব্রতা নিয়ে দৌড়াচ্ছে এসব বুঝতে পারি। আমাদের কাছে হার্টরেট আসে তার হৃৎস্পন্দনের হার কতটা তা আমাদের কাছে আসে। এতে করে নির্দিষ্ট দিনে একজন খেলোয়াড় কতটা ভার বহন করল তা বুঝা যায়। এটা আমাকে, ফিজিওকে বা মেডিকেল দলের যে কাউকে ওই খেলোয়াড় সম্পর্কে কোচদের কাছে মতামত দিতে পারে। কোন খেলোয়াড়ের কতখানি ফিটনেস দরকার, এসব বুঝে সেভাবে অনুশীলন পরিকল্পনা করা যায়।‍’

এই প্রযুক্তিতে পেস বোলারদের জন্য রয়েছে আলাদা অ্যালগরিদম। একজন পেসারের বোলিংয়ের কৌশলগত কোনো পরিবর্তন আনতে হবে কিনা তাও বুঝতে পারেন কোচরা। ক্যাটাপল্ট সিস্টেমের আরেকটি সুবিধা হলো পেস বোলিং অ্যালগরিদম। যখন একজন বোলার বল করে এটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য কম্পিউটারে পাঠিয়ে দেয় যেমন রানআপ দূরত্ব, রানআপের গতি, ক্রিজের লোড। কোচরা বুঝতে পারে কী ঘটছে। এরপরে তাঁরা যদি মনে করে কোনো কৌশলগত পরিবর্তন আনা দরকার তাহলে সেটা করতে পারে। ‘মূলত আমরা কী করছি তা সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়।‍‍’ বলেন নিক।

গত জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ান ডেভিড মুরকে হেড অব প্রোগ্রাম হিসেবে নিয়োগ দেয় বিসিবি। তার পরামর্শ মেনে ক্রিকেটারদের ফিটনেসের পূর্ণ চিত্র পেতে ও মানোন্নয়নের জন্য এবার এই আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মতো ক্রিকেট পরাশক্তিরা বেশ কয়েক বছর ধরে জিপিএস ব্যবহার করছে।

Link copied!