দাবায় ইতিহাসই গড়লেন ভারতের ডি গুকেশ। সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে রেকর্ড গড়লেন দাবায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার। বৃহস্পতিবার ১৪তম গেমে চিনের ডিং লিরেনকে ৭.৫-৬.৫’ এ হারিয়ে প্রথম টিনএজার হিসেবে গড়লেন অবিস্মরণীয় কীর্তি।
১৯৮৫ সালে ২২ বছর বয়সে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন কিংবদন্তি গ্যারি কাসপারভ। দাবায় উল্কার গতিতে ছুটতে চলা গুকেশ সেই রেকর্ড ভাঙলেন ১৮ বছর বয়সে। ম্যাচ জেতার পর চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি এই তরুণ। সেই পানিতে মিশে ছিল গর্ব আর স্বপ্ন পূরণের উচ্ছ্বাসও।
১৩তম ম্যাচ শেষে সমান পয়েন্ট ছিল গুকেশ ও ডিং লিরেনের। নিয়ম অনুযায়ী, যে আগে ৭.৫ পয়েন্টে পৌঁছতেন চ্যাম্পিয়ন হতেন তিনিই।
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর গুকেশ এক পয়েন্ট পেতেই পৌঁছে যান ৭.৫’এ। তাই আর টাইব্রেকার খেলার প্রয়োজন হয়নি।
শেষ গেমে কালো ঘুঁটি নিয়ে খেলেছেন গুকেশ। কালো ঘুঁটি নিয়ে আগেও ডিংকে হারিয়েছিলেন তিনি। চীনের ডিং লিরেন ৫৫তম মুভে একটা বড় ভুল করেন। ফলে যে ম্যাচ টাইব্রেকারের দিকে যাচ্ছিল তা জিতে নেন গুকেশ। ডিং পরে বলেছেন, “আমি যখন ব্যঝলাম, বড় ভুল করে ফেলেছি, তখন ভয়ংকর শোকের মধ্যে ছিলাম।”
জয়ের পর গুকেশ জার্মান গ্র্যান্ডমাস্টার ভিনসেন্ট কেইমারসহ তার সব প্রশিক্ষক ও সহযোগীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। প্রতিপক্ষের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, “ডিং সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নের মতোই খেলেছেন।”
চেন্নাইয়ে জন্ম নেওয়া গুকেশের বাবা চিকিৎসক। মা মাইক্রোবায়োলজিস্ট। সাত বছর বয়সে দাবা খেলা শুরু তার এক বছর পরেই অনূর্ধ্ব-৯ এশিয়ান স্কুল দাবা প্রতিযোগিতা জেতেন তিনি।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ফলে সবমিলিয়ে ভারতীয় মুদ্রায় ১১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা পেয়েছেন গুকেশ। চীনের দিং পেয়েছেন ৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
মাত্র ১২ বছর ৭ মাস ১৭ দিন বয়সে দ্বিতীয় কনিষ্ঠ হিসেবে গ্র্যান্ড মাস্টার হয়েছিলেন গুকেশ। ১২ বছর ৭ মাস বয়সে গ্র্যান্ড মাস্টার হওয়ার কীর্তিটা রাশিয়ার সের্গে কারজাকিনের।
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন গুকেশ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার বিভাগ দাবা খেলেছেন টানা দুই বছর। ২০২১ সালে বাংলাদেশ বিমান এবং ২০২২ সালে খেলেছেন বাংলাদেশ পুলিশের হয়ে।