জানুয়ারি ১০, ২০২৩, ১১:৪০ পিএম
ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার জিনেদিন জিদানের বিষয়ে অসম্মানজনক মন্তব্য করার পর দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই ক্ষমা চাইলেন দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট নোয়েল লে গ্রায়েত।
ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী এমিলি ওদিয়া-কাস্তেরা থেকে শুরু করে কিলিয়ান এমবাপ্পে পর্যন্ত একহাত নেন গ্রায়েতকে। চাপে পড়ে ফরাসি লিজেন্ড ফুটবলার জিদানের কাছে ক্ষমা চেয়ে গ্রায়েত বলেন, ‘আমি মন্তব্যগুলোর জন্য ক্ষমা চাইছি। এতে আমার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ছিল না, কোচ ও খেলোয়াড় নিয়ে বিবেচনাও ছিল না। আমার আসলে আরএমসিকে সাক্ষাৎকার দেওয়া ভুল হয়েছে। ওরা দুই সেরা খেলোয়াড়ের মধ্যে বিতর্ক তৈরি করতে চেয়েছিল।
রিয়াল মাদ্রিদের দায়িত্ব ছাড়ার পর অনেক দিন ধরেই কোচিং থেকে দূরে ছিলেন ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার জিনেদিন জিদান। গুঞ্জন ছিল ১৯৯৮ বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রান্সের জাতীয় দলের কোচ হতে পারেন। কিন্তু সম্প্রতি পুরনো কোচ দিদিয়ের দেশমকেই নতুন করে ফরাসি ফুটবল ফেডারেশন দায়িত্ব দেন। বিষয়টি ওখানেই থেমে যেতে পারতো। তবে জিদানকে অসম্মান করে নতুন বিতর্কের জন্ম দেন ফ্রান্সের ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট গ্রায়েত।
ফরাসি রেডিও আরএমসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গ্রায়েত বলেন, ‘আমি ভালো করেই জানি জিদান কোচিংয়ের আলোচনায় সব সময় ছিল। তার অনেক সমর্থক। অনেকে আবার দেশমের চলে যাওয়ার অপেক্ষায়। কিন্তু দেশমের কেউ নিন্দা করতে পারবে? কেউ না।’
এর পরেই তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যেহেতু দেশমকে ফ্রান্সের কোচ হিসেবে রাখা হয়েছে। ফলে জিদান এখন ব্রাজিলের দায়িত্ব সামলাতে পারেন কিনা। জবাবে বিন্দুমাত্র সম্মান দেখিয়ে কথা বলেননি গ্রায়েত। বলেন, ‘আমার তাতে কিছু যায় আসে না। সে যেখানে খুশি যাক। এটা আমার ব্যাপার না। আমি তার সঙ্গে কখনো দেখা করিনি। আর দেশমকে আমরা ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাও করিনি। জিদান যদি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে, তাহলে আমি তার ফোন ধরবো না।’
পাশাপাশি এও বলেন, 'আমার সঙ্গে জিদানের পরিচয় নেই। আর তাছাড়া দেশমই এখনও আমাদের কোচ। ওঁকে ছাঁটাই করার কথা ভাবছিই না।’
ফরাসি ফুটবল ফেডারেশন প্রধানের ওই মন্তব্য প্রচার হতেই সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একজন কিংবদন্তির প্রতি ন্যূনতম সম্মান না দেখানোয় ভীষণ চটেন ২০১৮ বিশ্বকাপ জয়ী তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেও। ফরাসি ফুটবলের প্রধান কর্তার এই মন্তব্যের জবাব দেন এমবাপ্পে।
ট্যুইট করে তিনি লেখেন, 'জিদান ফ্রান্সের কিংবদন্তি। আমরা তাঁকে যথেষ্ট সম্মান করি।' যদিও কোথাও ফরাসি ফুটবল প্রেসিডেন্টের নাম নেননি পিএসজি স্ট্রাইকার। তবে তাঁর নিশানা যে কোনদিকে তা বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এমবাপ্পের পাশাপাশি ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী এমিলি ওদিয়া-কাস্তেরাও একহাত নেন। পুরো দেশজুড়ে গ্রায়েতের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার জিদানকে হেয় করা মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন ফরাসি ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট।