মে ১৩, ২০২৩, ১০:৩৭ পিএম
শেষ মূহুর্তে এসে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ তার গতি বাড়িয়ে দিয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে দশটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টির গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ২৪০ কিলোমিটার। উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি। ধীরে ধীরে বাড়ছে বাতাসের গতিবেগ। ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিবেগ দ্রুত বাড়ায় উপকূলের সাথে কমছে এর দূরত্ব।
কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলছে এখন। এ কারণে উপকূল অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে কক্সবাজারের ৫৫টি হোটেল মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে কক্সবাজার হোটেল মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতি।
জেলা প্রশাসনের অনুরোধে আশ্রিতদের ফ্রি খাবার সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি,কক্সবাজার শাখা। তারা ইতিমধ্যে তাদের রেস্তোরাঁয় রান্না করা ৩ হাজার প্যাকেট খাবার সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছেন সমিতির কক্সবাজার শাখা সভাপতি নঈমুল হক টুটুল।
এ খবর নিশ্চিত করে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম বলেন, দুর্যোগপূর্ণ সময়ের কথা বিবেচনা করে আমরা ৫৫টি হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। এতে অন্তত অর্ধলাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন।
তিনি আওর জানান, জেলা প্রশাসনের অনুরোধে কক্সবাজারের এসব হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় মালিক সমিতি। এর আগে সেন্টমার্টিন দ্বীপের সব হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা যেহেতু কক্সবাজারমুখী, সেহেতু কক্সবাজারসহ সেন্টমার্টিন দ্বীপ ঝুঁকিতে রয়েছে। এ জন্যই সেন্টমার্টিনের সব হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। একই সাথে সেন্টমার্টিন থেকে বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা ও পর্যটকদের ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত ১০ নম্বর বাড়ার সাথে সাথে উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করে ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, কক্সবাজার জেলায় সিসিপির ৮ হাজার ৬০০ জন এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ২ হাজার ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। সেন্টমার্টিনে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও পুলিশের ভবনসহ ৩৭টি সরকারি স্থাপনা রয়েছে। তাই সেখানে সরকারি স্থাপনাগুলো সাইক্লোন শেল্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, দুর্যোগকালে ২০ লাখ নগদ টাকা রাখা হয়েছে, যার মধ্যে ১০ লাখ উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। ৫ দশমিক ৯০ মেট্রিক টন চাল, ৩ দশমিক ৫ মেট্রিক টন টোস্ট বিস্কুট, ৩ দশমিক ৪ মেট্রিক টন শুকনো কেক, ১৯৪ বান্ডিল ঢেউটিন, ২০ হাজার প্যাকেট ওরস্যালাইন এবং ৪০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র। জেলায় যে ৫৭৬টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেগুলোতে ৫ লাখ ৫ হাজার ৯৯০ জন মানুষ থাকতে পারবে।