আগস্ট ৭, ২০২১, ০৮:৫৯ এএম
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে দেশটি থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া লাখো রোহিঙ্গাদের বোঝা অনির্দিষ্টকালের জন্য বহন করা বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয় জানিয়ে এ সংকট সমাধানে বিশ্ব নেতাদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৬ আগস্ট) দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক জোট অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশন্সসের (আসিয়ান) এএফআর ২৮তম সভায় বক্তব্যকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
ব্রুনাইয়ে র রাজধানী বন্দর সেরি বেগওয়ানে অনুষ্ঠিত ২৮তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের ভার্চ্যুয়ালি নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
ড. মোমেন বলেন, যদিও বাংলাদেশ ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশন বা ১৯৬৭ সালের প্রটোকলের স্বাক্ষরকারী নয়, তথাপি শুধুমাত্র মানবিক দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে।
এআরএফ-এর গতিশীল নেতৃত্বে এ অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সুশাসন ও শক্তিশালী অর্থনীতির ভীত রচিত মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু ৬ হাজার ৮০০ একর সার্বভৌম বনভূমির ক্ষতি করে তাদেরকে আর আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়।
করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের ভূমিকা সংক্রান্ত বিষয়ে বক্তব্য দেওয়াকালে জনকল্যাণের সহিত অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত হওয়ায় ভ্যাকসিনকে ‘পাবলিক গুড’ হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘এর প্রযুক্তি সবার মধ্যে সমভাবে বণ্টন হওয়া উচিত। সেইসঙ্গে সাশ্রয়ী মূল্যে ভ্যাকসিন উৎপাদনের ওপরও জোর দেন ড. মোমেন।
সভায় রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, পরমাণু, সাইবার নিরাপত্তা ও অন্যান্য আঞ্চলিক সমস্যা সম্পর্কে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিষয়ে পারস্পরিক মতবিনিময় করেন আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামে যোগ দেওয়া নেতারা।
আসিয়ানের সদস্য রাষ্ট্রগুলো হলো মালয়েশিয়া,থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মায়ানমার, ব্রুনাই, কম্বোডিয়া এবং সিঙ্গাপুর।ব্রুনেইয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাটো এরিওয়ান পেহিন ইউসুফেল সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিভিন্ন রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ২৬টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
সভায় অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, সিঙ্গাপুর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দ্রুততম সময়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে একমত প্রকাশ করেন। পাপাপাশি এসব রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ স্বদেশ প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।