সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে গত এক বছরে বাংলাদেশিদের টাকার পরিমাণ নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে। ২০২১ সালে এক বছরেই বাংলাদেশিরা সুইস ব্যাংকে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ জমা করেছেন। এর আগে ২০২০ সাল পর্যন্ত
প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২০ সালে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি ৩০ লাখ সুইস ফ্রাঁ; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। ২০২১ সালে আরও ৩ হাজার কোটি টাকা জমা হওয়ায় গত বছর পর্যন্ত সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ দাড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি। এ অর্থ এ যাবৎকালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এসএনবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর সুইজারল্যান্ডের শতাধিক ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত ৮৭২ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁতে পৌঁছেছে। সুইজারল্যান্ডের প্রতি ফ্রাঁ বাংলাদেশের ৯৫ টাকার সমান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার মানুষ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বৈধ-অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থ গচ্ছিত রাখেন। দেশটির কঠোর গোপনীয় ব্যাংকিং নীতির কারণে সারা দুনিয়ার মানুষ সেখানে অর্থ জমা রাখেন।
সুইজারল্যান্ডের আইনে গ্রাহকদের গোপনীয়তা দৃঢ়ভাবে রক্ষার নিয়ম রয়েছে। এ আইনের ফলে দেশটির ব্যাংকগুলো কোনো পরিস্থিতিতেই গ্রাহকদের তথ্য কারও কাছে প্রকাশে বাধ্য নয়। ফলে কারা, কেন অথবা কীভাবে অর্থ ব্যাংকে রাখছেন, সে সম্পর্কে ব্যাংকগুলো কাউকে কোনো তথ্য দেয় না।
২০১৯ সালে দেশটির বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থের পরিমাণ ছিল ৬০ কোটি ৩০ লাখ ফ্রাঁ। ২০১৮ সালে এই অর্থের পরিমাণ ছিল ৬২ কোটি সুইস ফ্রাঁ। আর ২০১৭ সালে এর পরিমাণ ছিল ৬৬ কোটি ১৯ লাখ সুইস ফ্রাঁ।
তবে ২০২১ সালে বাংলাদেশিদের মতো সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের অর্থ গচ্ছিত রাখার পরিমাণও ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের গচ্ছিত অর্থ আগের বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে ৩০ হাজার কোটি রুপিতে পৌঁছেছে। যা গত ১৪ বছরের মধ্যে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে ভারতীয়দের সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ জমা।