চলন্ত ট্রেনে সন্তান প্রসব, স্টেশনে আনন্দের বন্যা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ৮, ২০২২, ০২:১৩ পিএম

চলন্ত ট্রেনে সন্তান প্রসব, স্টেশনে আনন্দের বন্যা

ঈদের ছুটি কাটিয়ে বাড়ি থেকে ট্রেনে করে ঢাকায় ফিরছিলেন এক নারী। গত ৬ মে সকালে রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস। ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফেরা কর্মব্যস্ত মানুষের ভিড় ট্রেনজুড়ে। সেই চলন্ত ট্রেনের মধ্যেই সন্তান প্রসব করলেন এক নারী যাত্রী। নবজাতক এবং মা দুজনই সুস্থ আছেন।

শুক্রবার (৬ মে) দুপুর ১টার দিকে রাজশাহী থেকে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে আসার পথে তিনি সন্তান প্রসব করেন। এদিকে চলন্ত ট্রেনে সন্তান প্রসবের ঘটনায় কমলাপুর স্টেশনের কর্মকর্তারা আনন্দ প্রকাশ করেন। স্টেশনের অনেকে মিষ্টি বিতরণ করেন।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ওই নারীর নাম পারুল। তিনি রাজশাহী থেকে ঢাকা আসছিলেন। মাঝপথে তার প্রসব বেদনা ওঠে। লোকজন এগিয়ে গেলে পারুল জানান, সে সন্তান-সম্ভবা। প্রসব বেদনা শুরু হয়েছে তার। পারুলের পেছনের আসনেই বসা ছিলেন কুমিল্লা অ্যাপোলো প্লাস হাসপাতালের সেবিকা আলিফা আক্তার। আলিফার বাসা রাজশাহীর শালবাগান এলাকায়। চাকরির সূত্রে তিনি থাকেন কুমিল্লা। ঈদের ছুটি শেষে তিনি ফিরছিলেন কর্মস্থলে। 

নারীর চিৎকার শুনে সঙ্গে সঙ্গে আলিফা বাড়িয়ে দেন সহযোগিতার হাত। ততক্ষণে পুরো বগির যাত্রীরা জেনে গেছে বিষয়টা। ট্রেনের রানিং স্টাফরাও এগিয়ে আসেন। ট্রেনের খাবার কেবিন থেকে আনা হয় গরম পানি, ট্রেনের মধ্যে থাকা ফাস্টএইড বক্স নিয়ে আসে ট্রেন পরিচালকরা।

ওই নারীর জন্য যেন প্রার্থনা পুরো ট্রেনজুড়ে। ট্রেন কর্মীরাও যোগাযোগ করছে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে। নারীর অবস্থা বেশি খারাপ হলে প্রয়োজনে আশপাশের কোনো হাসপাতালের কাছাকাছি স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে পারুল আক্তারকে।

ইতোমধ্যে সব ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেন সেবিকা আলিফা আক্তার। এসময় কয়েকজন নারী যাত্রীদের কাছে থেকে ওড়না নিয়ে ঘিরে ফেলে ওই আসনটি। ততক্ষণে মানুষের ভিড় সামাল দিয়ে সার্বিক নিরাপত্তা দিতে হাজির রেলওয়ে পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরাও। ইতোমধ্যে ট্রেনের মাইকে কোনো ডাক্তার থাকলে তার সাহায্য চেয়ে বার বার ঘোষণা দেওয়া হয়। ট্রেনটি টাঙ্গাইলের কাছাকাছি স্থানে এক ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।

এদিকে, বিকেল পৌনে ৩টায় ওই নারী তার সদ্যজাত সন্তানসহ কমলাপুর স্টেশনে পৌঁচান। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ট্রেনে সন্তান প্রসবের খবর পেয়ে কমলাপুর স্টেশন প্লাটফর্মে ছুটে আসেন রেলওয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক রিপন দাস ও শওকত জামির। তারা মা ও নবজাতককে রেলওয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান। রেলওয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরীফ গণমাধ্যমে বলেন, “ঢাকার রিজিওনাল কর্মকর্তা সবকিছু দেখভাল করছেন।”

Link copied!