অক্টোবর ১১, ২০২৫, ০১:৫৭ পিএম
ফাইল ফটো
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টার ‘সেফ এক্সিট’-এর প্রয়োজন নেই; বরং সেফ এক্সিট দরকার গোটা জাতির।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘খসড়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫’ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শ সভায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আইন মন্ত্রণালয়।
আসিফ নজরুল বলেন, “এখন সেফ এক্সিট নিয়ে কথা হচ্ছে। আমরা উপদেষ্টারা নিশ্চিতভাবে জানি, আমাদের কারও কোনো সেফ এক্সিটের প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের জাতি হিসেবে সেফ এক্সিটের প্রয়োজন আছে। গত ৫৫ বছর ধরে এই দেশে দুঃশাসন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা হয়েছে। এই ভয়াবহ রাষ্ট্র কাঠামো থেকে মুক্তিই আসল সেফ এক্সিট।”
আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা হয়তো খুব ভালো কিছু আইন তৈরি করছি, কিন্তু শুধু ভালো আইন করলেই দেশ ভালো হয়ে যাবে—এমনটা ভাবার বয়স আমার নেই।”
তিনি বলেন, “আমরা প্রতিষ্ঠান গঠনে ব্যর্থ হয়েছি। ১৯৭২ সালের সংবিধানে ভালো কিছু বিধান ছিল, যেমন—রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্তভাবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন। কিন্তু কোনোদিনই তা হয়নি; সব সময় প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এমনও প্রধান বিচারপতি ছিলেন, যাঁরা মানবাধিকার ও গণতন্ত্র ধ্বংসে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁদের কেউ কেউ এখনো আছেন এবং সরকার সংস্কারের দায়িত্বেও রয়েছেন।”
প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, “ভালো আইন ফাউন্ডেশন, কিন্তু তার ওপর খারাপ ভবন বানিয়ে লাভ নেই। প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভালো হতে হবে। সরকারে এসে দেখছি—সব কিছু ব্যক্তিকেন্দ্রিক, প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক নয়।”
সভায় আরও বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান প্রমুখ।
সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের একটি সাক্ষাৎকারে উপদেষ্টাদের ‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গ তোলার পর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় ৯ অক্টোবর সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ফেসবুকে লিখেছিলেন, “বাহাত্তরোর্ধ্ব বয়সে যদি সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তা আমার জন্য গভীর দুঃখের বিষয়।”
এর আগের দিন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, “উপদেষ্টাদের মধ্যে কারা সেফ এক্সিট নিতে চান, সেটা নাহিদ ইসলামকেই পরিষ্কার করতে হবে।”