বেটা
বহুমুখী প্রতিভার দৃষ্টান্ত দিতে বলা হলে বিশ্বসাহিত্য কিংবা ইতিহাসে যাদের নাম উপেক্ষা করা কঠিন, ওমর খৈয়াম তাদের মধ্যে অন্যতম ও শীর্ষস্থানীয়। পারস্যের প্রেম ও বিরহের এই কবির জন্মদিন আজ ১৮ মে। ইরানের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ কবি, গণিতবেত্তা,দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ ওমর খৈয়াম ১০৪৮ সালের এই দিনে ইরানের নিশাপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
ওমর খৈয়ামের পুরো নাম গিয়াসউদিন আবুল ফাতেহ ওমর ইবনে ইব্রাহিম আল-খৈয়াম নিশাপুরি। যুবক বয়সে তিনি সমরখন্দে চলে যান এবং সেখানে শিক্ষা শেষ করেন।পরে বোখারায় নিজেকে মধ্যযুগের একজন প্রধান গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
ওমর খৈয়াম একইসাথে একজন দার্শনিক, কবি, গণিতজ্ঞ এবং জ্যোতির্বিদ। রসকষহীন গণিত নিয়ে তিনি কাজ করেছেন। অনেকের ধারণা রনে দেকার্তের আগে ওমর খৈয়াম বিশ্লেষণী জ্যামিতি আবিষ্কার করেন। তিনি স্বাধীনভাবে গণিতের ‘দ্বিপদী উপপাদ্য’ আবিষ্কার করেন। বীজগণিতে ত্রিঘাত সমীকরণের সমাধান তিনিই প্রথম করেন।
আধুনিক বীজগণিতের ভিত্তি তৈরি হয়েছে ওমর খৈয়ামের হাতে। কাজ করেছেন ইউক্লিডীয় জ্যামিতি নিয়েও। ভূগোল, বলবিদ্যা, খনিজবিজ্ঞান, আইন, এমনকি সঙ্গীতও বাদ যায়নি তার জ্ঞানপিপাসার তালিকা থেকে।
আবার তিনিই লিখেছেন মধুর সব কবিতা। ওমর খৈয়াম একজন অসাধারণ কবি ছিলেন। চতুষ্পদী কবিতার অমর সংকলন ‘রুবাইয়াত’ রচনা করেছেন তিনিই। এটি একটি কবিতা নয়, শত শত কবিতার সংকলন। তার এই কবিতার সংকলন ১৯ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত অবহেলিতই ছিল।
১৮৫৯ সালে এডওয়ার্ড ফিটজগেরাল্ড এই কবিতা সংকলনের ইংরেজি অনুবাদ ‘রুবাইয়াত অব ওমর’ প্রকাশ করলে ওমর খৈয়ামের কবিখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তার কবিতাগুলো পশ্চিমা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়। এমনকি তার নিজ দেশের চেয়েও বেশি!
জীবনের শেষ দিকে এসে হয়েছেন শিক্ষক; শিক্ষাদান করেছেন ইবনে সিনার দর্শন ও গণিত বিষয়ে। ১১৩১ সালের ৪ ডিসেম্বর জন্মস্থান নিশাপুরেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
